রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা হতাশ


প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

এ বছর সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার সল্প মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ায় তা পাচারের আশঙ্কা করছেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে সীমান্ত এলাকাগুলোতে এরই মধ্যে চামড়া পাচারে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীরা এবার চামড়া কিনতে পারছেন না। কারণ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তাদের থেকে বেশি দামে চামড়া কিনচ্ছেন।

স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, বছর জুড়েই চামড়া কেনাবেচায় বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন তারা। কিন্তু কোরবানির ঈদে কমপক্ষে ২০ থেকে ২২ কোটি টাকার চামড়া কেনা-বেচা হয়। ওই টাকা ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে ঈদের আগে পাওয়া যায় না। ফলে ঈদে নতুন করে চামড়া কিনতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা যোগার করতে হিমশিম খেতে হয় তাদের।

রাজশাহীতে ঈদে প্রতি বছর প্রায় ৩০-৩৫ হাজার গরু, ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজারের মতো ছাগল, ৭০০-৮০০ মহিষ এবং প্রায় ৪ হাজারের মতো ভেড়া কোরবানি করা হয়। এসব পশু জবাইয়ের পর চামড়া কেনা-বেচা শুরু হয়। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এসব চামড়া এবারো ফড়িয়া ব্যবসায়ীরাই সংগ্রহ করছেন।

ঈদে ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে চামড়া পাচার কোনোভাবেই বন্ধ সম্ভব নয়।  

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাদেকুর রহমান মাসুদ জানান, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চামড়া পাচার প্রতিরোধে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। তবে এবার ঈদের আগে সে ধরনের কোনো বৈঠক হয়নি। তাই এবারো ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে পারছেন না। তারা সন্ত্রাসী কায়দায় পাড়া-মহল্লায় ঢুকে সিন্ডিকেট করে চামড়া কিনে নিচ্ছে। ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা সরাসরি চামড়া কিনতে পারেন না। কারণ ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা কখনো বর্গফুট মেপে চামড়া কেনেন না। অনুমাণ নির্ভর আকারে চড়া দাম দিয়ে চামড়া কিনে নেন। যা আড়তে এসে বিক্রি করতে পারেন না। পরে গোপনস্থানে মজুদ করে সীমান্ত দিয়ে সুকৌশলে ভারতে পাচার করে। এ বছরও এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না বলে জানান।

এদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাজশাহী-৩৭ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর কামরুল হাসান জানান, এই ঈদে যাতে সীমান্তপথ দিয়ে কোনোভাবেই চামড়া পাচার না হতে পারে সেজন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রতিটি বিওপিতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাস্তায় যেসব বিজিবি চেকপোস্ট থাকবে তাদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় কোনো চামড়া পাচার হয় তাহলে সেগুলো আটকেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী জানান, চামড়া পাচার রোধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় এবার বৈঠক করা হয়নি।

তবে মন্ত্রণালয়ের সকল নির্দেশনা বিজিবি, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে এরই ইতোমধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই যেন চামড়া পাচার না হয় সেজন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।