কাশ্মীরে ঢোকার অুনমতি চেয়ে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের চিঠি
বিদেশি সাংবাদিক ও কংগ্রেস সদস্যদের জন্য কাশ্মীরে অবাধ চলাচলে বাঁধা না দেয়ার জন্য ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কংগ্রেসের ছয় সদস্য এ নিয়ে একটি চিঠিও দিয়েছেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে।
কংগ্রেসের ছয় সদস্য স্বাক্ষরিত চিঠিটি যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলার কাছে পাঠানো হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেস কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠকের পর স্বচক্ষে কাশ্মীর পরিস্থিতি দেখতে সেখানে কংগ্রেস সদস্যদের পাঠানো হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ১৬ অক্টোবরের বৈঠকে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা কাশ্মীর পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদেরকে যা জানিয়েছিলেন, কাশ্মীরের প্রকৃত চিত্রটি তেমন নয় বলেই জেনেছেন মার্কিন কংগ্রেসে সদস্যরা। বিষয়টিতে স্বচ্ছতার অবাব ছিল। তাই তারা কাশ্মীর সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পেতেই এমন পদক্ষেপ নিল।
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কার্যনির্বাহী সহকারী সচিব অ্যালিস জি ওয়েলসের প্রতিবেদনে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। উপত্যকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর দিকনির্দেশও চাওয়া হয়েছে ভারত সরকারের কাছে।
পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার দিনই ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে চিঠিটি লিখেছেন মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ডেভিড এন সিসালিনি, ডিনা টাইটাস, ক্রিসি হুলাহ্যান, অ্যান্ডি লেভিন, সুজ়ান ওয়াইল্ড এবং জেমস পি ম্যাকগভর্ন।
চিঠিতে হর্ষবর্ধন শ্রিংলার কাছে অনেক বিষয়ে জানতে চেয়েছেন তারা। উপত্যকায় ল্যান্ডলাইন সংযোগ পুরোপুরি ফিরেছে কি না, না-ফিরলে কত বাকি আছে? প্রিপেইডসহ সমস্ত মোবাইল কবে থেকে চালু হবে করবে? সবাই ইন্টারনেট সংযোগ কবে থেকে পাবেন?
এছাড়া গত ৫ অগস্ট থেকে জন নিরাপত্তা আইনসহ অন্যান্য আইনে কজন গ্রেফতার হয়েছে? তাদের মধ্যে কতজন কমবয়সী? জননিরাপত্তা আইনে অভিযুক্তদের বিচারের পদ্ধতি কী? কারফিউয়ের অবস্থা কী? কবে থেকে উপত্যকাবাসী স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন?
মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের কাছে আরও প্রশ্ন করেছেন যে, কাশ্মীরে বিদেশি সাংবাদিক প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে কেন? কবে থেকে সেই বাধা প্রত্যাহার করা হবে? মার্কিন কংগ্রেস সদস্যসহ অন্য বিদেশি কর্মকর্তাদের কবে থেকে জম্মু-কাশ্মীরে যেতে দেয়া হবে?
কংগ্রেস সদস্যরা জানিয়েছেন, কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের বিশেষ অনুচ্ছেদ বাতিল করা, ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, রাজনৈতিক নেতা ও সমাজকর্মীদের গ্রেফতারি এবং উপত্যাকায় কারফিউ জারি করে অবরুদ্ধ করে রাখায় তারা চিন্তিত।
চিঠিতে তারা লিখেছেন, ‘গোটা বিষয়টিতে তখনই স্বচ্ছতা আসবে, যখন সাংবাদিক ও কংগ্রেস সদস্যদের ওই এলাকায় অবাধ চলাচলে বাধা দেয়া হবে না। আমরা ভারতকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও অন্য বিদেশিদের জন্য কাশ্মীরে যেতে বাধা না দিক।’
এসএ/পিআর