হরিয়ানায় বিজেপি কংগ্রেস কেউই জেতেনি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। এছাড়া দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমন মুহূর্তে এসে যেসব দল কিছু আসন পেয়েছে তারা হয়ে উঠেছে কিংমেকার।

গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হতেই বিজেপি কংগ্রেস উভয় দলই সরকার গঠনে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে হরিয়ানার লোকহিত পার্টির নেতা গোপাল কান্ডা শুক্রবার ঘোষণা দেন, তার দলের ছয়জন বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থন দেয়ার জন্য প্রস্তুত।

হরিয়ানায় এ নিয়ে আটজন স্বতন্ত্র বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থনের ঘোষণা দিলেন। বিজেপির হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজধানী দিল্লি গেছেন রাজ্যটির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, হরিয়ানায় সরকার গঠনের বিষয়ে আশাবাদী তিনি।

হরিয়ানার এমন পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বাড়িতে গভীর রাতে একটি বৈঠক শুরু হয়, যা শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চলে। বিজেপি ৯০ সদস্যের হরিয়ানা বিধানসভায় ৭৫টি আসন পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও পেয়েছে মাত্র ৪০টি আসন।

কংগ্রেস ৩১ আসন পেয়ে জোট সরকার গঠনের জন্য জননায়ক জনতা পার্টির (জেজেপি) দুষ্মন্ত চৌতালার দ্বারস্ত হয়েছে। তারা কাল সকাল থেকেই চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার গঠনের। অঙ্কের হিসাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য জেজেপির ১০ জন বিধায়কেরও বেশি সমর্থন প্রয়োজন কংগ্রেসের।

লোকহিত দলের নেতা গোপাল কান্দা বলেন, ‘আমরা বিজেপিকে নিঃশর্ত সমর্থন দেব। আমার বাবা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে (আরএসএস) ছিলেন, তাই আমরা এ পরিবারেরই অংশ। আমরা সবাই বিজেপিকে সমর্থন করতে রাজি হয়েছি।’

মুখ্যমন্ত্রী খাট্টার চণ্ডীগড়ে তার সরকারি বাসভবন থেকে হেলিকপ্টারে সকাল ৯টা ৩০ মিনেটে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন। তার আগে বলেন, ‘আমরা হরিয়ানায় সরকার গঠন করতে যাচ্ছি। আমি আশাবাদী।’

লোকহিত দলের প্রধান ৫৩ বছর বয়সী গোপাল কান্দার একটি বিতর্কিত রেকর্ড রয়েছে। ২০১২ সালে তার নাম একজন বিমান সেবিকার আত্মহত্যার সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুদার মন্ত্রিসভা থেকে তিনি পদত্যাগ করেছিলেন।

dushyant chautala & Gopal Kandaলোকহিত পার্টির নেতা গোপাল কান্দা এবং জননায়ক জনতা পার্টির নেতা দুষ্মন্ত চৌতালা

নির্বাচনের ফলাফলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বিজেপি এমন খবর আসতে শুরু করার পর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের জন্য গত রাতেই লোকহিত দলের নেতা ও হরিয়ানা নির্বাচনের ‘কিংমেকার’ গোপান কান্দাসহ দুজনকে নিয়ে বিজেপি সাংসদ সুনিতা দুগল দিল্লিতে যান।

অন্য যেসব বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে তারা হলেন নয়ন পাল রাওয়াত, ধরমপাল গোদার, সোমবীর সংঘওয়ান, বলরাজ কুণ্ডু, রন্ধির গৌন্ডাল এবং রঞ্জিত সিং। লোকহিত দলের নেতাসহ এ ছয়জনের বাইরে আরও দুজন বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

দুষ্মন্ত চৌতলার জেজেপি ১০টি আসন পাওয়ার পর তাকেই হরিয়ানা সরকার গঠনে কিংমেকার ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু বিজেপি মাত্র ছয় আসন প্রয়োজন হওয়ায় তিনি গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন। গতকালই কংগ্রেস তার সঙ্গে যোগাযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী করারও প্রস্তাব দিয়েছিল।

বৃহস্পতিবার সকালে ফল আসা শুরু হওয়ার পর চৌতলা বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি জেজেপির হাতে রয়েছে আসল চাবিকাঠি।’ সূত্র বলছে, ভোটের ফল পাওয়ার পর ৩১ বছর বয়সী সাবেক ওই কংগ্রেস নেতা মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

হরিয়ানায় জেজেপির সভাপতি সরদার নিশান্ত সিং বলেন, বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়ের কাছ থেকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করার পরই সিদ্ধান্ত জানাবো।’

কংগ্রেস প্রচারের নেতৃত্বদানকারী ভূপিন্দর হুদা বলেন, তিনি আশা ছাড়েননি। ভূপিন্দর হুদার ছেলে দিপেন্দ্র হুদা বিজেপির সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আলোচনা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, ‘তারা তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক কবর খুঁড়ছে। তারা জনগণের আস্থা বিক্রি করছে। মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না।’

অবশ্য ফলাফল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ জয়কে একটি ‘অভূতপূর্ব জয’ বলে উল্লেখ করেন। মোদি বলেন, ‘এই দুই রাজ্যে জয় আসলে অভূতপূর্ব জয়। কারণ সাধারণভাবে খুব কম সরকারই পাঁচ বছর পরে ফিরে আসে। এ সময়ে পুনর্নির্বাচিত হওয়া একটি বড় বিষয়।’

এসএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।