কাশ্মীরের সমাধান দিন নইলে পারমাণবিক যুদ্ধ : জাতিসংঘে ইমরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তিনি চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘকে এ সতর্কবার্তা দেয়ার চেষ্টা করছেন যে, যদি আশু সমাধান না হয় তাহলে অবরুদ্ধ কাশ্মীর উপত্যকা নিয়ে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকির মুখে রয়েছে বিশ্ব। এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে গত ফেব্রুয়ারিতে। ভারত ওই সময় পাকিস্তানে ঢুকে বিগত অর্ধশতাব্দীর মধ্যে প্রথমবার যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালায়। দিখণ্ডিত ও বিতর্কিত কাশ্মীর উপত্যকা নিয়ে এর আগে দুবার যুদ্ধে জড়িয়েছে বৈরী এই দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র।

শান্তি প্রতিষ্ঠার নিদর্শন হিসেবে পাক প্রধানমন্ত্রী আটক ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলট অভিনন্দনকে ভারতে ফেরত পাঠালে উত্তেজনা কিছুটা কমে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে গোটা কাশ্মীরকে অবরুদ্ধ করে রাখায় উত্তেজনা আবার বেড়েছে।

ভারত সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের প্রেক্ষিতে বিশ্বের অন্যতম সামরিকায়িত উপত্যকাটি আরও ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করে। ইমরান খান বলছেন, যা কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী মোদির চিন্তার ফসল। পাক প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফ্যাসিস্ট বলে অভিহিত করেছেন।

ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটিতে এখনো কারফিউ জারি রয়েছে। কিন্তু ইমরান খান বলছেন, যদি একবার কারফিউ তোলা হয় তাহলে সেখানকার মানুষ তাদের ক্ষোভের সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে।

ইমরান খান বলেন, ‘তারা রাস্তায় নেমে পড়বে। তারপর কী হবে? কারফিউ জারি রাখার কাজে বর্তমানে কাশ্মীরে মোট ৯ লাখ ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রয়েছে। আমি এ ভয়ে ভীত যদি তা হয় তাহলে সেখানে গণহত্যা শুরু হবে এবং পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।’

নিজেকে কাশ্মীরিদের দূত (অ্যাম্বাসেডর) বলে ঘোষণা দেয়া পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেই মূলত আমি এখানে এসেছি। আমরা একটা মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে আছি কিন্তু কেউ তা অনুভব করছে না।’

ইমরান বলেন, এখন এই সময়ে দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ একে অপরের মুখোমুখি। গত ফেব্রুয়ারিতেও আমাদের (কাশ্মীর ইস্যুতে) মুখোমুখি হতে হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে কী হতে পারে তিনি তা ভাবতে বলেছেন বিশ্বনেতাদের।

পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আমার দেশের সেনাপ্রধান ও বিমানবাহিনীর প্রধান আমাকে বলেন যে, ভারতীয় বিমানবাহিনী আমাদের দেশে ঢুকে বোমা হামলা করেছে। আমার এখ কী করবো? তারা আমাকে বলে, ‘আমরা নাকি আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জার্মান চ্যাঞ্চেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, ফ্যান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন।

ট্রাম্প মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন; তবে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশ তার প্রস্তাবে রাজি হলে তবেই। পাকিস্তান রাজি থাকলেও ভারত বরাবরই মধ্যস্থতার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলছে, কাশ্মীর তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

ইমরান খান ভারতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বলেন, ‘আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আমাদের হাতে আর কী উপায় আছে? আমরা কী করবো? আমরা কী শুধু দুঃস্বপ্ন দেখে এই আশা করবো যে কিছু ঘটেনি?’ উপায় না থাকলে নিজেদের মতো উপায় তৈরির কথা বলেছেন তিনি।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।