রোহিঙ্গাপ্রীতি কক্সবাজারবাসীকে ভবিষ্যতে পরবাসী করবে
শরণার্থী হয়ে কিংবা অনুপ্রবেশ করে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য সর্বক্ষেত্রে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এ উপলব্দি না আসায় কক্সবাজারের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি জন্ম বা জাতীয়তা সনদ দিয়ে তাদের ভোটার হতে সহযোগিতা করছে। ভোটারপ্রার্থীর প্রদেয় এসব কাগজ তৎক্ষণাৎ নিখূতভাবে পরীক্ষা করা হয়ে উঠে না। সে কারণে অনেক ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা এ দেশের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে কক্সবাজারবাসী নিজভূমে পরবাসীর মতো হবে। তাই রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া থেকে বিরত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম।
শনিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা শুধু মানবিক সমস্যা নয়। এটি একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সমস্যা। রোহিঙ্গারা এ দেশের ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন। আর টাকার জন্য কক্সবাজারের লোকজন তাদের সহযোগিতা করছেন। বিষয়টি উদ্বেগজনক।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনের জরিপমতে ২০১৫ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদে নতুন ভোটার হওয়ার কথা ২ দশমিক ৪৫ ভাগ মানুষের। কিন্তু কক্সবাজারে এ হার প্রায় ৬ শতাংশের কাছাকাছি। গতবার নির্বাচন কমিশন যাদের রোহিঙ্গা হিসেবে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে তারা এবারও ফরম পূরণ করেছেন। বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। এ জন্য জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে।
ইসি সচিব বলেন, হালনাগাদে তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করা হয়। নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন, মৃত ব্যক্তিদের বাদ দেয়া ও স্থানান্তর করা। কিন্তু কক্সবাজারের মৃত ব্যক্তিদের ভোটার তালিকা থেকে পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাদ দেয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এবার হালনাগাদ কার্যক্রমে ১৮ বছরের কম বয়সীদের নিবন্ধিত করা হচ্ছে। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারির আগে যাদের জন্ম তাদের এর আওতায় আনা হয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে কিন্তু ভোটার আইডি দেওয়া হবে না।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আইডিইএ প্রকল্পের পরিচালক ব্রি. জে. সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অনুপম সাহা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন, জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ফাহমিদা বেগমসহ সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা। সভাশেষে সচিব উখিয়া উপজেলায় চলমান হালনাগাদ কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনে যান।
সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/পিআর