পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখলে সেনাবাহিনী প্রস্তুত: ভারতীয় সেনাপ্রধান
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে যখন ভারতের তীব্র উত্তেজনা চলছে; ঠিক সেই সময় চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াত। বৃহস্পতিবার ভারতীয় এই সেনাপ্রধান বলেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত সেনাবাহিনী।
ভারতের এই সেনাপ্রধান বলেন, কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্যই এ পদক্ষেপে সরকারকে সাহায্য করবে। সেখানে শান্তি ফেরাতে সরকারকে একটা সুযোগ দেবেন তারা।
সেনাপ্রধানের পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্যের সুর শোনা গেছে দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের কণ্ঠেও। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এখন লক্ষ্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে উদ্ধার করা। এটা শুধু দলের এজেন্ডা নয়, ১৯৯৫ সালে নরসিমা রাওয়ের সরকারে সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।
কয়েকদিন আগে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত কাশ্মীরে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের রিপোর্টের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শান্ত কাশ্মীরের কথা বলেছিলেন তিনি। যদিও বিরোধীরা সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
গত ৫ আগস্ট মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন-সংক্রান্ত সংবিধানের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেশটির ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী সরকার। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত শাসনের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিরা আন্দোলন করে আসছে।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষে হাজার হাজার কাশ্মীরির প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের জেরে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মাঝে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। সীমান্তে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে গোলাবর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বেশ কয়েকবার তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছে পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আগস্টে উত্তেজনা শুরুর পর পাকিস্তান সেনাপ্রধানও ভারতের যেকোনো ধরনের আগ্রাসন মোকাবেলা এবং পাল্টা জবাব দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন।
জম্মু-কাশ্মীরের চলমান পরিস্থিতির কারণে যেকোনো মুহূর্তে ‘আকস্মিক যুদ্ধ’ শুরু হতে পারে বলে বুধবার সতর্ক করে দিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। অস্থিতিশীল এই অঞ্চল সফর করার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল বাচেলেতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এসআইএস/এমকেএইচ