টুইন টাওয়ার হামলা : শাকিলা-নুরুলরা বেঁচে আছেন অন্যভাবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৬ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের বে রিজ এলাকায় অবস্থিত তৃতীয় অ্যাভিনিউ ও ওভিংটন অ্যাভিনিউ। বাংলাদেশিদের অনেকেই এখান দিয়ে যাতায়াত করেন। যাতায়াতের সময় একটু ওপরের দিকে তাকালেই দুটি নাম চোখে পড়বে; একটি শাকিলা ইয়াসমিন, অন্যটি নুরুল হক মিয়া।

তারা দুজন দম্পতি ছিলেন। কাজ করতেন টুইন টাওয়ারে অবস্থিত মার্শ অ্যান্ড ম্যাকলেনেন কোম্পানিতে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলায় দুজনই প্রাণ হারান।

শাকিলার জন্ম ১৯৭৫ সালে ঢাকায়। বাবা-মার সঙ্গে ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমসে লেখাপড়া শেষ করে মার্শ অ্যান্ড ম্যাকলেনেন কোম্পানিতে চাকরি করছিলেন। তার অফিস ছিল এক নম্বর টুইন টাওয়ারের ৯৩ তলায়।

শাকিলার স্বামী নুরুল হক মিয়ারও বাংলাদেশে জন্ম। শাকিলার আগে থেকেই মার্শ অ্যান্ড ম্যাকলেনেনের অডিওভিজ্যুয়াল বিভাগে চাকরিরত ছিলেন তিনি। তারও অফিস ছিল ওই ভবনের ৯৭ তলায়।

Shakila-Nurul-1

এই দম্পতি ব্রুকলিনের বে রিজ এলাকায় বাস করতেন। তাদের প্রতিবেশী ছিলেন ডায়ান হান্ট। তার উদ্যোগে ওই দম্পতির বাড়ির কাছের রাস্তার কর্নারের নামকরণ করা হয় ‘শাকিলা ইয়াসমিন অ্যান্ড নুরুল হক মিয়া ৯-১১ মেমোরিয়াল ওয়ে’।

টুইন টাওয়ার হামলায় নিহত বাংলাদেশি-অ্যামেরিকানদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০০৬ সালে ডেইলি স্টার পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী।

তিনি জানান, হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস নিহত ১০ জনের একটি নামের তালিকা তৈরি করেছিল। তালিকায় শাকিল ও নুরুল ছাড়া বাকিরা হলেন- মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ, আবুল কাশেম চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ সাদেক আলী, আশফাক আহমেদ, নাভিদ হোসেন ও ওসমান গনি।

twin-towers-3

এই দশজনের মধ্যে মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরীর গল্প নিয়ে এইচবিও একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন সালাহউদ্দিন। টুইন টাওয়ারে অবস্থিত ‘উইন্ডোজ অন দ্য ওয়ার্ল্ড’ রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন তিনি। সালাহউদ্দিন সাধারণত রাতের শিফটে কাজ করতেন। কিন্তু সেদিন রাতে গর্ভবতী স্ত্রীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন বলে কাজ করছিলেন সকালের শিফটে। সালাহউদ্দিনের মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা পর সেই সন্তানের জন্ম হয়।

সালাহউদ্দিনের সঙ্গে একই রেস্টুরেন্ট কাজ করতেন তিন সন্তানের জনক সাব্বির আহমেদ। নিহত মোহাম্মদ শাহজাহান কম্পিউটার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করতেন মার্শ অ্যান্ড ম্যাকলেনেনে। আবুল কাশেম চৌধুরী ক্যান্টর ফিটসগেরাল্ড সিকিউরিটিজ-এ সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট অ্যানালিস্ট ছিলেন। অন্যদের মধ্যে মোহাম্মদ সাদেক আলী ছিলেন সংবাদপত্র বিক্রেতা। আশফাক আহমেদ, নাভিদ হোসেন ও ওসমান গনি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে। জঙ্গি বিমান হামলায় টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার জন্য বরাবরই আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদাকে দোষারোপ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।