ডেঙ্গুর প্রকোপ : ভ্রমণে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র
মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া এবং জিকার পর এখন শহরে জীবনে নতুন আতঙ্ক হয়ে ধরা দিয়েছে ডেঙ্গু। গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলোতে এটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু দেশে এর প্রকোপ এতটাই বেড়েছে যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বহু প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের ওপর সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষ করে এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের যেসব স্থানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি সেসব স্থানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ জ্বর, শরীরে ব্যথা এবং গায়ে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠা। তবে অনেক ক্ষেত্রেই কিছু মারাত্মক সমস্যাও দেখা দেয়। বিশেষ করে অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই শরীরে রক্তপাত, বিশেষ করে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই ভাইরাস বহনকারী মশার হাত থেকে বাঁচা। কিন্তু এটা এত ছোট একটা প্রাণী যে অনেক সময় আমরা দেখতেও পাই না। ফলে খুব সহজেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পড়ছি।
সিডিসি সতর্ক করে বলেছে, যেসব দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি সেখানে ভ্রমণের সময় ইপিএ নিবন্ধিত পোকা তাড়ানোর ওষুধ, অর্থাৎ মশার হাত থেকে বাঁচাবে এমন ওষুধ, বাইরে বের হওয়ার সময় লম্বা হাতাওয়ালা শার্ট এবং লম্বা প্যান্ট, ঘুমানোর সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রন্তিত কক্ষে ঘুমানো, জানালার পর্দা টেনে অথবা মশারি টানিয়ে ঘুমানোর জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যেহেতু ডেঙ্গুর জন্য এখনও নির্দিষ্ট কোনো টীকা আবিষ্কৃত হয়নি তাই প্রতিরোধের ওপরই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৭ হাজার ৯৮৩ জন। একই সময়ে ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর মোট সংখ্যা ৭৪ হাজার ৭১৪ জন।
তবে আগামী কয়েক মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এ সময়ে এডিস মশার প্রজননের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে থাকতে পারে। অপরদিকে পূর্ব চীনে ছয় শতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে আছে নেপাল। তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে বড় আকারে জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে। নেপালের মহামারি ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের চিকিৎসক প্রকাশ সাহা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যেন ডেঙ্গুর ভাইরাস বহনকারী মশার প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
টিটিএন/এমকেএইচ/জেআইএম