বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ায় হত্যা, পাকিস্তানে তিনজনের যাবজ্জীবন
পাকিস্তানের অন্যতম আলোচিত ‘অনার কিলিং’ অর্থাৎ ‘সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ডের’ মামলায় তিন ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ওমর খান, সাবির এবং সাহির। নিহত তিন নারীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা।
২০১১ সালে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের ভিডিওটিতে দেখা যায়, হত্যার শিকার ওই তিন নারী গান গাইছেন এবং হাততালি দিচ্ছেন। সেই ভিডিও প্রকাশের জেরে তাদেরকে হত্যা করা হয়। তাদের মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সেসময় ওই নারীদের সঙ্গে থাকা দুজন পুরুষ এখনো পলাতক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুজন নারীর ভাগ্যে কী ঘটেছে, সেটাও এখনো জানা যায়নি। হত্যাকাণ্ডের পর সহিংস সংঘাতে আরও চারজন নিহত হয়েছিল।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের একটি আদালত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক পাঁচ ব্যক্তিকে মামলা থেকে খালাস দিয়েছে। কেন হত্যা করা হয়েছিল ওই নারীদের কিংবা তখন কী ঘটেছি, তার বিস্তারিত জানা যায়নি।
২০১১ সালে ভিডিওটি প্রকাশিত হয়। যেখানে দেখা যায়, কয়েকজন নারী একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাইছেন এবং হাততালি দিচ্ছেন। তাদের নাম বাজীগা, সিরিন জান, বেগম জান এবং আমিনা। শাহিন নামের ১৮ বছরের কমবয়সী একজন নারীও সেখানে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভিডিওতে একজন পুরুষকেও নাচতে দেখা যায়। যদিও ওই পুরুষ আর নারীদের কখনোই এক ফ্রেমে দেখা যায়নি। ভিডিওটি ধারণ করছিলেন অপর এক ব্যক্তি। শুধুমাত্র এটুকুই ছিল ওই তিন নারীর দোষ। তাই তাদেরকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় তাদের পরিবারের সদস্যরা।
উত্তর কোহিস্তানের দূর্গম অঞ্চলের মানুষ পরিবারের সম্মানের সাথে জড়িত বিষয়গুলোর সুরাহা করে রক্তের বিনিময়েই। স্থানীয় প্রথা অনুযায়ী, কোন নারীর বিরুদ্ধে বিবাহরীতির পরিপন্থী কোনো কার্যক্রমে জড়ানোর অভিযোগ উঠলে তাকে তার পরিবারের সদস্যরা হত্যার পর অভিযুক্ত পুরুষকেও হত্যা করে।
যে পুরুষকে হত্যা করা হবে, তার পরিবারও রীতি মোতাবেক বাধা দিতে পারবে না। অর্থাৎ প্রকাশি ওই ভিডিওতে যতজনকে দেখা গিয়েছিল, তাদের সবারই জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে। ঘটনা ২০১১সালে হলেও ২০১২ সালে তা জানাজানি হয়।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
এসএ/এমএস