৩৯ বছর বয়সে ৪২ সন্তানের মা
আফ্রিকার উগান্ডার এক মায়ের বয়স ৩৯ বছর। কিন্তু এই বয়সেই তিনি জন্ম দিয়েছেন ৪২ জন সন্তান। স্বামী পরিত্যক্তা এই নারীর নাম মারিয়ম নবট্যানজি।
দেশটির রাজধানী কামপালার উত্তরে ৫০ কিলোমিটার দূরে একটি ছোট গ্রামে ঘর বানিয়ে সন্তানদের নিয়ে তার সংসার।
মারিয়মের ছোটবেলা কাটে কষ্টের। তার তিনদিন বয়সে তাকে ফেলে রেখে চলে যান মা। এরপর দাদির কাছেই বেড়ে উঠেন তিনি। কিন্তু ১২ বছর বয়স হলে তাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন দাদি। এর এক বছর পরই যমজ সন্তানের জন্ম দেন মারিয়ম। যমজ সন্তান পেয়ে খুব খুশি হন তিনি।
কিন্তু এরপর টানা চার বার যমজ সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম। তিনি বুঝতে পারেন কোথাও একটা সমস্যা হচ্ছে। তিনি চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক তাকে জানান, তার ডিম্বাশয়ের আকার অত্যন্ত বড় এবং তিনি নিজেও ভীষণভাবে ফার্টাইল।
এ অবস্থায় যদি তার গর্ভনিয়ন্ত্রণের অপারেশন করা হয়, তা হলে তার ক্ষেত্রে প্রাণঘাতীও হতে পারে। কোনও গর্ভনিয়ন্ত্রক ওষুধও তার পক্ষে মারাত্মক হতে পারে বলে জানান চিকিৎসক।
কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না মারিয়ম। ইতোমধ্যেই ৮ সন্তানের জন্ম দিয়ে ফেলেন তিনি। স্বামীকে বিষয়টি জানান মরিয়ম। বারবার এভাবে একাধিক সন্তানের জন্ম দেয়াটা বন্ধ হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি। কিন্তু স্বামী তার কথায় একেবারেই কান দেননি।
ফলে চিকিৎসকের আশঙ্কাই সত্যি হলো। এরপর আরও চার বার এক সঙ্গে তিন সন্তান এবং আরও পাঁচবার এক সঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দেন মারিয়ম।
আড়াই বছর আগে শেষ বার মা হয়েছিলেন মারিয়ম। সে বারও যমজ সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তাদের মধ্যে একজন মারা যায়। এরপরই তাকে বাড়ি থেকে বার করে দেয় তার স্বামী। এর মধ্যে অন্য এক নারীকে বিয়েও করে নেন তার স্বামী।
সব মিলিয়ে মোট ৪২ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মারিয়ম। তবে তাদের মধ্যে বেঁচে রয়েছে ৩৮ জন।
বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার পর ৩৮ সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন মারিয়ম। জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সামনে তাকে যেন দাড় করিয়ে দিয়েছিল ভাগ্য। ৩৮ সন্তানকে ভালো শিক্ষা-খাবার কীভাবে দেবেন, সেটাই তাকে দীর্ঘ দিন ভাবায়। তবে হাল ছাড়েননি তিনি।
তখন তার দাদি তাকে অনেক সাহায্য করেন। কামপালায় যে বাড়িতে মারিয়মের সংসার এখন, সেটা তাকে দাদিই করে দিয়েছিলেন। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মারিয়ম। নানা রকম কাজ করে সংসার চালান তিনি।
‘পুরো পরিবারের জন্য সারা দিনে ২৫ কিলোগ্রাম ভুট্টা লাগে। আর্থিক অনটনের জন্য মাছ-মাংস রান্না হয় না বললেই চলে। বড়রা রান্না এবং ঘরের কাজে মাকে সাহায্য করে। কোন দিন কে কোন কাজটা করবে, তার একটা রুটিন ঘরের দেয়ালে টাঙানো রয়েছে’,- জানান মারিয়ম।
জেডএ/জেআইএম