পুড়ে ছাই আমাজনে সেনা মোতায়েন
পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত অন্যতম বড় রেইন ফরেস্ট আমাজন। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো।
ছোট-বড় মিলিয়ে ৪০ হাজার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা একটু একটু করে শেষ করে দিচ্ছে পৃথিবীর ২০ শতাংশ অক্সিজেনের জোগানদাতা এই অরণ্যকে। প্রতিবছর ২শ কোটি মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এই বন।
আর সে কারণেই বিশাল এই বন ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামে পরিচিত। এছাড়া পৃথিবীর বেশিরভাগ নদীর উৎস আমাজন। এখানে রয়েছে ৪৫ লাখ প্রজাতির পোকামাকড়, বাস করে তিন শতাধিক উপজাতি।
আমাজনে ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যরা যেন সহায়তা করেন সেজন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক ডিক্রি জারি করে প্রকৃতি রক্ষা, আদিবাসী জমি ও সীমান্ত এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইউরোপীয় নেতাদের ক্রমাগত চাপের মুখেই এমন নির্দেশ দেয়া হলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে আটলান্টিকের উপকূল পর্যন্ত। এমনকি দুই হাজার মাইলেরও বেশি দূরে সাও পাওলোর আকাশ এই ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে গেছে।
আমাজনের জঙ্গলের ভেতর প্রায় কয়েক হাজার স্থানে আগুন জ্বলছে। গত এক দশকে এমন ব্যাপক মাত্রায় সেখানে দাবানল সৃষ্টি হয়নি।
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তরাঞ্চলীয় রোরাইমা, একার, রনডোনিয়া এবং আমাজোনা রাজ্য এবং কাছাকাছি মাতো গ্রোসো ডো সুল এলাকাতে। আগুন থেকে কুণ্ডলি পাকিয়ে ওঠা ধোঁয়া আমাজনের পুরো এলাকাজুড়ে এবং আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে।
আগুন থেকে প্রচুর পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হচ্ছে, যার পরিমাণ এ বছর ২২৮ মেগাটনের সমপরিমাণ দাঁড়িয়েছে। এই পরিমাণ ২০১০-এর পর সবচেয়ে বেশি।
এই ধোঁয়া থেকে কার্বন মনোক্সাইডও নির্গত হচ্ছে। কাঠ পোড়ালে সচরাচর এই গ্যাস নির্গত হয়। খুবই চড়া মাত্রায় বিষাক্ত এই গ্যাস কার্বন মনোক্সাইড দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল ছাড়িয়ে এখন আরও দূরে ছড়িয়ে পড়ছে।
আমাজনে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
টিটিএন/জেআইএম