‘বিয়ে হবে না জেনেও দৈহিক সম্পর্ক, ধর্ষণ বিবেচিত হবে না’
পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক দীর্ঘদিনের হলেও ভবিষ্যতে বিয়ে হবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন নারী। কিন্তু দু’জনে একসঙ্গে রয়েছেন অনেক দিন ধরে। মানসিক বন্ধনের সঙ্গে তৈরি হয়েছে শারীরিক সম্পর্কও। এই ধরনের সম্পর্কে নিজের পুরুষ সঙ্গীর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারবেন না নারী, এমন নির্দেশনা জারি করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
দেশটির কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) এক ডেপুটি কম্যান্ডান্টের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন সেল ট্যাক্সের এক নারী সহকারী কমিশনার। এ ঘটনায় মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
সেই মামলার ভিত্তিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় দিয়েছেন। ভারতের শীর্ষ এই আদালত বলছেন, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে সম্পর্ক ছিল ওই দুই কর্মকর্তার। বিভিন্ন সময়ে একে অন্যের বাড়িতে গিয়েও থেকেছেন অনেকবার। ফলে এটা স্পষ্ট যে দু’জনের মধ্যেই শারীরিক সম্পর্কও ছিল।
২০০৮ সালে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এই দুই কর্মকর্তা। তারপর ২০১৬ সালে সিআরপিএফের ওই ডেপুটি কম্যান্ডান্টের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন তার নারী সঙ্গী। অভিযোগ বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন তার প্রেমিক।
ওই নারীর অভিযোগ, তিনি সেসময় জানতে পারেন অন্য আর এক নারীর সঙ্গে তার সঙ্গীর এনগেজমেন্ট হতে চলেছে। তবে সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল এই ঘটনার দু’বছর আগেই। ২০১৪ সালে ভিন্ন জাতে বিয়ে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তার পুরুষ সঙ্গী। কিন্তু সম্পর্ক তখনও ভাঙেনি। তবে অন্য নারীর সঙ্গে সঙ্গীর ভবিষ্যৎ তৈরি হতে চলেছে শুনে আর থেমে থাকেননি তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একটা সম্পর্কে, ভবিষ্যতে প্রতিশ্রুতি ভাঙবে জেনেও এক পক্ষ আর এক পক্ষকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। সেটা শুধুই হয়তো মজা কিংবা শারীরিক সম্পর্কের জন্য। আবার অনেক ক্ষেত্রে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে বিয়ে করবেন ভেবেই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয় না। এই দু’ধরনের বিষয়ের ক্ষেত্রে যে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।
এসআইএস/এমকেএইচ