কিশোরকে অপহরণের পর ৪০ দিন যৌনদাস হিসেবে ব্যবহার
ভারতে ৩৮ বছর বয়সী নারী ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরকে অপহরণ করার পর ৪০ দিন তাকে যৌনদাস করে রেখেছিল। অবশেষে ওই নারীর হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে কিশোর। আর অপহরণের দায়ে সোমবার ওই নারীকে মুম্বাই থেকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বনভোজন থেকে কৌশলে কিশোরকে অপহরণ করেন ওই নারী। তাকে নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যান। পরে দিল্লিসহ বেশ কিছু স্থানে আটকে রেখে যৌনদাস হিসেবে ব্যবহার করেন।
গত ২ জুলাই নিখোঁজ ছেলে উদ্ধারে নেহরুনগর পুলিশ স্টেশনে ডায়েরি করে কিশোরের বাবা। এছাড়া অপহরণের মামলাও দায়ের করেন তিনি। এদিকে গ্রেফতার নারী সায়রা বানুর স্বামীও স্ত্রী নিখোঁজের ঘটনায় ডায়েরি করেন। তারা উভয়ই মুম্বাইয়ের কুরলার বাসিন্দা। গ্রেফতার ওই নারীর চার সন্তান রয়েছে।
ঘটনাটি নিয়ে দুই পক্ষ থেকে ডায়েরি ও মামলা হওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তথ্য নেয়ার পর সোমবার সায়রার মায়ের মাধ্যমে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়। অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার ওই নারীকে আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। কিশোরকে উদ্ধারের পর তাকে তার পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ঘটনা নিয়ে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
কিশোর জানিয়েছে, ‘মুম্বাইয়ে প্রতিদিনই আমাদের কথা হত। আমরা প্রতিবেশী ছিলাম। একদিন আমাকে বনভোজনে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানায় সায়রা। আমরা দিল্লি যাই। সেখানে গিয়ে সায়রা জানায়, দিল্লিতে সে ভাড়াবাড়ি নিতে চায়। এরপর গয়না বিক্রি করতে শুরু করে।’
তবে জমানো টাকা সব খরচ হওয়ায় তাকে তিনদিন না খাইয়ে রেখেছিল বলে অভিযোগ করেছে ওই কিশোর। সে বলছে, ‘এরপর সায়রা আমাকে নিয়ে ভদোদরা যায়। সেখান থেকে নবসারী। এরপর একটি কাপড়ের দোকানে কাজ পায় সে। বেতন ৭০০০ টাকা। আমিও ছোটখাট কাজ করে টাকা উপার্জন করছিলাম। এরপর সায়রা বাড়ি বাড়া নেয়। আমার ওপর শুরু হয় অত্যাচার।’
নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে কিশোর জানায়, ‘আমাকে একা কোথাও যেতে দিত না। গত ৪০ দিন রাতে ভাল করে ঘুমাতে পারিনি। যৌন চাহিদা মেটাতে সায়রা আমাকে রাতে ঘুমাতে দিত না। এমনকি আমাকে সবার সামনে স্বামী বলে পরিচয় করিয়ে দিত।
কিশোরের বলে, ‘এসব নিয়ে অস্বস্তি হতো আমার। তাই সায়রাকে মুম্বাই আনার জন্য একটা পরিকল্পনা করেছিলাম। তাকে বলি তোমাকে বিয়ে করব। কিন্তু মুম্বাই যেতে হবে। গুজরাটে থাকতে পারবো না। সায়রা রাজি হয়ে যায়। অবশেষে আমি মুক্তি পেয়েছি।’
এসএ/পিআর