পেটে প্লাস্টিক, মারা গেল বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী ডুগং
তার বাঁচার সংগ্রাম উদ্বুদ্ধ করেছিল থাইল্যান্ডের সমুদ্র প্রাণী সংরক্ষকদের। তারাও আপ্রাণ লড়েছেন তার মতোই। যত রকমের চিকিৎসা সম্ভব, করেছেন তার। কিন্তু বাঁচার সমস্ত লড়াই শেষ। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে শনিবার গভীর রাতে মৃত্যুর কাছে হার মানল ‘শিশু’ ডুগং, যে সবার কাছে মরিয়ম নামে পরিচিত ছিল।
এটি প্রায় বিলুপ্তপ্রায় সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী। মালয় ভাষায় এর নামের অর্থ হলো সমুদ্রের ভদ্রমহিলা। এর আরেক আঞ্চলিক নাম সমুদ্রের গাভী (বা ধেনু)।
দক্ষিণ-পশ্চিম থাইল্যান্ডের সমুদ্র উপকূলে গতমাসে ভেসে এসেছিল এই ছোট্ট ডুগংটি। তার ছটফটে হাবভাব সবার নজর কেড়েছিল স্বাভাবিকভাবেই। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও তার ফটো ভাইরাল হয়েছিল।
একজন থাই রাজকন্যা তার নাম রেখেছিলেন ‘মরিয়ম’। তিনিই তার খাওয়া-দাওয়া এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু গতকাল মাঝরাতে সমস্ত চিকিৎসা ব্যর্থ করে মৃত্যু হয় মরিয়মের। চিকিৎসকদের মতে, রক্তে সংক্রমণ ঘটায় মারা যায় বাচ্চা ডুগংটি। মরিয়মের পেট থেকে পাওয়া গেছে এক টুকরো প্লাস্টিক। এর থেকেই দূষিত হয়ে পড়ে রক্ত, দাবি চিকিৎসকদের।
তারা আরও বলেন,‘আমরা শ্বাসকষ্টের সমস্যা ঠিক করতে পারি। কিন্তু পেটের ভেতর জমে থাকা বর্জ্য বের করে ডুগংয়ের চিকিৎসা অসম্ভব। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের মন্তব্য, ‘মরিয়ম শিখিয়ে গেল, কী করে সবাইকে ভালোবাসতে হয়। যেন বলে গেল, আমাদেরও যত্ন নাও, ভালোবাসো। তোমাদের সঙ্গে আমরাও বাঁচতে চাই।’
মাত্র একমাসে মরিয়ম থাইল্যান্ডে এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে তার মৃত্যুর খবর রোববার সেদেশের সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়ে ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মরিয়মের খবর শেয়ার করে থাইল্যান্ডের সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় সম্পদ সংরক্ষণ বিভাগ।
ডুগংয়ের মৃত্যুর খবর জেনে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দুঃখ করে লেখেন, ‘নিজের জীবন দিয়ে আমাদের ভুলের মাশুল গুনল ছোট্ট মরিয়ম।’
সূত্র : এনডিটিভি
জেডএ/পিআর