চামড়া পাচাররোধে সীমান্তে কঠোর নজরদারি
কোরবানির পশুর চামড়া পাচাররোধে যশোরের মোকাম ও সীমান্তবর্তী এলাকায় কঠোর নজদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার ভিডিপি যৌথভাবে চামড়া পাচাররোধে কাজ করবে। ঈদের দিন থেকে পরবর্তী এক মাস পর্যন্ত সীমান্তের দিকে চামড়া পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে দেশের অভ্যন্তরে চামড়া পরিবহনে কোনো বাধা দেবে না প্রশাসন।
সোমবার যশোর জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, প্রতিবছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম রাজারহাটে ঈদ পরবর্তী হাটে কোটি কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা হয়। অধিক মুনাফার আশায় কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী চামড়া সীমান্তপথে ভারতে পাচার করে দেয়। এ বছর দেশের চামড়া ভারতে পাচার রোধে হার্ডলাইনে প্রশাসন।
যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ জানান, দেশের অন্যতম বৃহত্তম চামড়ার মোকাম রাজারহাটে জাল টাকা সনাক্তের মেশিন ও একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চামড়া পাচার প্রতিরোধে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা কাজ করবে। ঈদের দিন থেকে একমাস সীমান্তের দিকে চামড়া পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সীমান্তে চামড়া পরিবহন করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সীমান্ত থেকে দেশের অভ্যন্তরে চামড়া পরিবহন করা যাবে।
খুলনা বিভাগীয় বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ দফতরের হিসাব অনুযায়ী, এবার কোরবানিতে ১০ জেলায় অন্তত সাত লাখ গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া জবাই হবে। এর মধ্যে গরু তিন লাখ ৫৭ হাজার ৯১২টি, ছাগল তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৬০টি, ভেড়া সাত হাজার ৯৫৬টি ও এক হাজার ৭৯৭টি মহিষ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতি বছর ঈদ পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ পশ্চিমের যশোরের বেনাপোল, শার্শা ও চৌগাছা সীমান্ত দিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা চামড়া পাচার করে। গত বছর নভেম্বরে বিজিবি সদস্যরা সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার পিস গরু ও ছাগলের চামড়া জব্দ করেছিল। এবারও চামড়া পাচারের আশঙ্কা রয়েছে। সীমান্ত পথে চামড়া পাচার বন্ধে জেলা প্রশাসন কঠোর নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ অঞ্চলের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম রাজারহাটে বিক্রি হয় কোটি কোটি টাকার চামড়া। সেখানে জাল টাকা সনাক্ত মেশিন ও অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে হাটে বিক্রি হওয়া চামড়ার চালানপত্রে ক্রেতা বিক্রেতার নাম, মোবাইল নম্বর ও গন্তব্য স্থলের নাম লিখতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী চালানপত্রে তথ্য না থাকলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চামড়া জব্দ করবে। এ বছর ভারত থেকে গরুর আমদানি কমে যাওয়ায় দেশি পশুতেই কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে। ফলে দেশের পশুর চামড়া ভারতে পাচার রোধে হার্ডলাইনে রয়েছে প্রশাসন।
বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল জানিয়েছেন, প্রতি বছরই ঈদের পর চামড়া পাচারে সক্রিয় হয় কতিপয় চক্র। এজন্য কোরবানির ঈদের আগেই প্রশাসন চামড়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছে।
মিলন রহমান/এআরএ/আরআইপি