আসাম থেকে বাংলাদেশিদের তাড়াতেই যেন সব উদ্যোগ
ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনের (এনআরসি) তালিকায় অনেক অবৈধ বাংলাদেশির নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। যারা দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধভাবে আসামে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু এই তালিকা থেকে আদিবাসী লোকজনকে বাদ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভারতের অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)।
এর আগে আসাম থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এবার এবিভিপির তরফ থেকে দেয়া বক্তব্যে আদিবাসীদের আসামে রাখার পক্ষে সমর্থন জানানো হলেও দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করা বাংলাদেশিদের অবৈধ বলে উল্লেখ করেছে।
আরএসএস-এর এই ছাত্র সংগঠন এনআরসির তালিকায় ভুলের জন্য রাজ্য সমন্বয়কারী প্রতীক হাজেলাকে দায়ী করেছে। এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা আগামী ৩১ আগস্ট প্রকাশিত হবে। এবিভিপির আসাম পরিষদের সেক্রেটারি রাকেশ দাস মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভুল নথি তৈরির পেছনে দায়ী প্রতীক হাজেলা। এই নতুন ফর্মেই যদি এনআরসির তালিকা প্রকাশ হয় তবে কয়েক লাখ আদিবাসীকে আসাম ছাড়তে হবে। প্রতীক হাজেলা এটা ইচ্ছা করেই করেছেন। এর ফলে ভুল তালিকা প্রকাশ হবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
এনআরসির জন্য যেসব আবেদন পড়েছে তা পুনরায় শতভাগ যাচাইয়ের আবেদন জানিয়েছেন রাকেশ দাস। তিনি বলেন, এনআরসির জন্য আসামের লোকজন ৩০ বছর ধরে অপেক্ষা করেছে। এখানে কোন ভুল থাকা উচিত নয়। সঠিক তথ্যের জন্য যদি আরও সময়ও লাগে তবুও লোকজন অপেক্ষা করবে।
সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে আসামে ভারতীয় নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে গত দু'বছর ধরে। প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করাই এর প্রধান লক্ষ্য, বিশেষ করে যারা ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের পর সেখানে এসেছে।
এর আগে এনআরসির তালিকা প্রকাশের চূড়ান্ত সময়সীমা দেয়া হয়েছিল ৩১ জুলাই। এই সময়সীমা বাড়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় কেন্দ্র ও আসাম সরকার। পরে গত ২৩ জুলাই এই আবেদন মেনে নিয়ে সময়সীমা ৩১ জুলাই থেকে একমাস বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়। আসামই একমাত্র রাজ্য যেখানে এনআরসি রয়েছে। ১৯৫১ সালে প্রথম এনআরসি তৈরি করা হয়।
গত জুনে এনআরসির প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ গেছে প্রায় ৭০ লাখ বাংলাভাষী অধিবাসী। এই ৭০ লাখের মধ্যে ২৫ লাখ বাঙালি হিন্দু এবং বাকিরা বাঙালি মুসলিম। এনআরসি নিয়ে তাই আতঙ্কে রয়েছেন সেখানকার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেও যদি এখন অবৈধ তালিকায় থাকতে হয় তাহলে তারা এখন কোথায় যাবেন?
টিটিএন/জেআইএম