দিল্লি বিমানবন্দরে কাশ্মীরের নেতা গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০১৯

শাহ ফয়সাল। ছিলেন ভারতীয় প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। রাজনীতির কারণে চাকরি ছেড়েছেন। কাশ্মীরের রাজনীতির একজন অন্যতম নাম তিনি। তাকে বুধবার দিল্লি বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতারের পর গৃহবন্দী করে কাশ্মীরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি তাদের অনলাইন প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়ে বলছে, দিল্লি বিমানবন্দর হয়ে দেশের বাইরে যাচ্ছিলেন শাহ ফয়সাল। কাশ্মীরের সাংবাধানিক মর্যাদা রদ করার পর সরকারের সমালোচনা করে নানা মন্তব্য করার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হলো।

গতকাল নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে দেয়া এক বার্তায় শাহ ফয়সাল বলেন, কাশ্মীরে অহিংস রাজনৈতিক গণ আন্দোলন প্রয়োজন। কাশ্মীরিদের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য তাদেরকে এই আন্দোলন করতে হবে। তা না হলে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

টুইট বার্তায় শাহ ফয়সাল কাশ্মীরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে সকল কাশ্মীরিদের একজোট হয়ে দীর্ঘস্থায়ী একটি অহিংস আন্দোলন করতে হবে। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের মাধ্যমে মূলধারার আন্দোলন করার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’

কাশ্মীরিদের আন্দোলন করার ডাক দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানপন্থীরা আর নেই। তাই আপনি এখন ঠিক করবেন যে আপনি কি তোষামোদকারী হবেন নাকি বিচ্ছিন্নতাবাদী হবেন। এর যেকোনো একটা আপনাকে হতেই হবে। কোনো নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকা যাবে না।’

গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। শুধু বিশেষ মর্যাদা বাতিল নয় কাশ্মীরকে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়।

বিশ্বের সবচেয়ে সামরিকায়িত একটি এলাকা হলো কাশ্মীর। সেখানে লাখো সেনা মোতায়েন রয়েছে। এর মধে কাশ্মীরকে দিখণ্ডিত করার ঘোষণা দেয়ার আগে সেখানে আরও ৩৫ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

হাজার হাজার নিরাপত্তাকর্মী কাশ্মীর উপত্যকায় রয়েছেন। মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও বন্ধ রয়েছে। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে থাকা অনেক কাশ্মীরি তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তারা ঈদে বাড়িতেও ফিরতে পারেননি।

এদিকে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের পক্ষ থেকে মোদি সরকারের কাশ্মীর সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে।

দলটির নেতা ও এমপি আকবর লোন এবং হাসনাইন মাসুদির তাদের দায়ের করা পিটিশনে কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেছে। তারা ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলক ‘অসাংবিধানিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

কাশ্মীরিরা যাতে কোনো প্রতিবাদ করতে না পারে তাই সেখানে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানকার মানুষ এখন সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। মোদি সরকারের মাস্টারে প্ল্যানের কাছে হেরে বিক্ষোভে ফুঁষে উঠেছে কাশ্মীর মানুষ।

কারফিউ জারি থাকার কারণে সেখানে মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে না। এ ছাড়া সেখানকার সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রভাবশালী স্থানীয় নেতাসহ পাঁচ শতাধিক সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম সামরিকায়িত এলাকাগুলোর একটি কাশ্মীর। ভারতীয় সংবিধোনের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এতদিন কাশ্মীর প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া কোনো কিছুতেই ভারতীয় আইন মানতে বাধ্য ছিল না। কিন্তু মোদি তা বাতিল করেছে। এ ছাড়া রাজ্যের মর্যাদাও হারিয়েছে কাশ্মীর।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।