কুড়িগ্রামে ভাতা বঞ্চিত ৪২ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার


প্রকাশিত: ০৭:১৫ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার অবহেলার কারণে ৪২টি মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ৪১ মাস ধরে ভাতার টাকা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৪২ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার দীর্ঘদিন থেকে সম্মানী ভাতা পেয়ে আসছিল। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা ও তার উপকারভোগীদের অনেকে মৃত্যুবরণ করায় ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়। আকস্মিকভাবে ভাতা বন্ধ হওয়া পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, ভাতাপ্রাপ্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হলে তার প্রাপ্য ভাতা তার উত্তরাধিকারী হিসেবে তার স্ত্রী/স্বামী/স্বামীর অর্বতমানে বাবা/মা, স্ত্রী, স্বামী ও বাবা-মার অবর্তমানে ছেলে/মেয়েদের প্রদানের নির্দেশ রয়েছে।

তা সত্ত্বেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এজেড.এম এরশাদ আহসান হাবিব ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা এসএম জোবাইদুল ইসলামের অবহেলার কারণে মৃত মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিনের ছেলে এসএম নাহিন গত ১৪ মে/২০১৫ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক আবেদনগুলো তদন্ত করে মতামত পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং কুড়িগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য একেএম মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক মানবিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সূত্র মতে, গত ১৭ মে তারিখে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা বিতরণ কমিটির সভায় উক্ত ভাতাপ্রাপ্ত ৪২ পরিবারের সকল তথ্যাদি যাচাই/বাছাই করে সঠিক থাকায় জেলা কমিটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। জেলা কমিটিতে পাঠানোর পর উক্ত ভাতার টাকা উত্তোলনের জন্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন র্কমর্কতার নাম ভাঙিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এসএম জোবাইদুল ইসলাম ও জেলা সমাজসেবা অফিস সহকারী মজিবর রহমান প্রাপ্ত ভাতার জন্য প্রত্যেকের কাছে ৫০/৬০ হাজার টাকা অগ্রিম উৎকোচ দাবি করেন।

উৎকোচ ছাড়া কোনো ভাবেই ভাতার টাকা উত্তোলন করা যাবে না এবং ভাতা বাতিল করা হবে বলে জানিয়ে দেয়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়ে হয়রানিসহ ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এসকল বিষয় উল্লেখ করে ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবারো অভিযোগ দাখিল করেছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা এসএম জোবাইদুল ইসলাম উৎকোচ চাওয়া এবং অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নীতিমালার আলোকে ৪২ পরিবারের ফাইল প্রস্তুত করে জেলা কমিটির কাছে জমা দেয়া হয়েছে। ক্রটিপূর্ণ কাগজের কারণে ফাইল আবার ফেরত এসেছে। মূলত ২০১৩ সালে নতুন প্রজ্ঞাপনের আলোকে বঞ্চিত ৪২ পরিবার আবেদন করে।

নাজমুল হোসেন/এসএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।