কাশ্মীর ভাগ হচ্ছে জানতেন না মোদি সরকারের মন্ত্রীরাও!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৬ এএম, ০৬ আগস্ট ২০১৯
ভারতের লোকসভার ভোটের কালি নখ থেকে পুরোপুরি ওঠেনি এখনও। অমিত শাহ বেশ কিছু কাগজপত্র নিয়ে সংসদে ঢুকছেন। হাসিমুখে ঘুরে ঘুরে ছবিও তুলছেন। হাতের সেই কাগজও ক্যামেরা-বন্দি হচ্ছে। তাতেই প্রথম আভাস মেলে যে, কাশ্মীর নিয়ে বড় কোন ঘোষণা আসতে চলেছে।
অমিত শাহের সঙ্গে তখন শুধু সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী ছিলেন। বাকি ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ছিলেন। সোমবার সকালে সেখানেই জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন মোদি। অধিবেশন শুরুর আধা ঘণ্টা আগেও সংসদে আসার ছাড়পত্র পাননি তারা। কারণ পুরো ঘটনায় খুব গোপন রাখা হয়েছে।
গোপনীয়তা শব্দটি যেন নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছে। বিজেপির একাধিক সাংসদই বলছেন, শনি ও রোববারের ছুটি বাতিল করে কেন সাংসদদের প্রশিক্ষণ শিবিরে ডাকা হয়েছিল, তা তারা তখন ক্ষুণাক্ষরেও টের পাননি।
এক মন্ত্রী বলেন, আসলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাইছিলেন যেন মন্ত্রীরা সবাই দিল্লিতেই থাকেন। সাধারণত শুক্রবার হলে সাংসদরা নিজেদের নির্বাচনী কেন্দ্রে ফিরে যান। আর সোমবার দিল্লি পৌঁছাতে অনেকের দেরি হয়। আমাদের দিল্লিতে রেখে দেওয়া হয়েছে যেন সোমবার সকালেই সবাই হাজির থাকতে পারি।
সোমবার অমিত শাহ সংসদে আসার কিছুক্ষণ পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আসেন। এরপর আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাকি মন্ত্রীরা একেবারে শেষ মুহূর্তে উপস্থিত হন।
এক মন্ত্রী একগাল হেসে বলেন, এমনটা যে হবে, সেটা সকাল সাড়ে ৮টার আগেও ঘুণাক্ষরে জানতে পারিনি। এগারোটা পর্যন্ত কাউকে বলা নিষেধ ছিল। বিলে ঠিক কী কী আছে, তার খুঁটিনাটি অবশ্য এখনও জানি না।
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জম্মুর ‘বড়’ নেতা হিসেবে পরিচিত। গতকালও সাংসদদের কর্মশালায় ছিলেন তিনি। কিন্তু এক ধাক্কায় ৩৭০ ধারা বাতিল করে দেওয়া হবে, সেটা তিনিও টের পাননি।
তিনি বলেন, ভেবেছিলাম বড়জোর ৩৫-এ অনুচ্ছেদ সরানো হতে পারে। সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল এনে, দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের সমর্থন ছাড়াও যে অন্য পথে ৩৭০ অনুচ্ছেদ তোলা যেতে পারে, সে ব্যাপারে কোনও ধারণা ছিল না।
কয়েকদিন ধরেই জম্মু-কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানো হয়েছে, অমরনাথযাত্রী ও পর্যটকদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, অজিত ডোভালরা ঘন ঘন বৈঠক করেছেন। উপত্যকার নেতাদের যখন গৃহবন্দি করা হয় তখনই কাশ্মীর নিয়ে ‘কিছু একটা হচ্ছে’ এটা আঁচ করতে পারছিলেন সবাই। কিন্তু রাষ্ট্রপতি বিদেশ বিদেশ সফর শেষ করে দেশে ফিরেই যে কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করবেন সেটাই ভাবনার বাইরে থেকে গিয়েছিল শাসক দলের বড় অংশেও।
টিটিএন/পিআর