কুমিল্লায় ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২:২৯ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মেয়াদ উত্তীর্ণ কাঠের স্লিপার, আগাছায় পরিপূর্ণ পুরো লাইন, নেই পাথর। এমনই বেহাল দশা কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকার। এছাড়াও এ জেলার রেলপথের অধিকাংশ এলাকাই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। প্রকল্প থাকলেও এ জেলার ১৭০.৫৫ কি: মি: রেলপথের পুরো এলাকা থেকে এখনো কাঠের স্লিপার অপসারণ করে রড-সিমেন্টের ঢালাইকৃত স্লিপার সংযোজন করা হয়নি। অনেক স্থান থেকে চুরি হয়ে গিয়েছে লোহার এঙ্গেল ক্লিপ। রেলওয়ে কর্মীদের উদাসীনতায় লাইনের অনেক এলাকা আগাছায় পরিপূর্ণ, নেই পর্যাপ্ত পাথর। খোদ কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকায়ই এমন চিত্র।

জেলার অন্যান্য স্থানের অবস্থা আরো নাজুক। এহেন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ঢাকা-চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-নোয়াখালী রেললাইনের কুমিল্লা অংশে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

জানা যায়, কুমিল্লা রেলস্টেশন সহকারী নির্বাহী প্রকৌশল দফতর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-চাঁদপুর-নোয়াখালী রেলাইনের ১৭০.৫৫ কি: মি: এলাকা দেখভাল করা হয়। এসব এলাকার মধ্যে শুধুমাত্র লাকসাম থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী রেললাইন ছাড়া অবশিষ্ট এলাকা এখনো সিঙ্গেল লাইনের আওতায়। এতে লাকসাম থেকে উত্তরে আখাউড়া আউটার সিগন্যাল পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটসহ অন্যান্য রেলরুটে সরাসরি রেলযোগাযোগ বন্ধ রাখতে হয়। সর্বশেষ গত ২৫ আগস্ট জেলার ব্রাহ্মণপাড়ার শশীদল আউটার সিগন্যালে ঢাকাগামী মহানগর গোধূলী এক্সপ্রেস ট্রেনের ৩টি বগি ও ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হলে প্রায় ৭ ঘণ্টা সারাদেশের সঙ্গে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।

জানা যায়,  রেললাইনের অনেক স্থানে এখনো কাঠের স্লিপার রয়েছে। এছাড়াও মাদকসেবীরা রাতে আঁধারে খুলে নিচ্ছে লোহার ক্লিপ। অনেক স্থানে আগাছায় ঢেকে গেছে লাইন, নেই পর্যাপ্ত পাথর। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। রেলপথকে ঘিরে মাদকাসক্ত ও নেশাখোরদের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় নেশাসক্ত ও বখাটেরা এসব ক্লিপ খুলে নিয়ে তা বিক্রি করে নেশার টাকা জোগাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রেললাইনের অধিকাংশ স্থানের এঙ্গেল ক্লিপ ও নাট-বল্টু না থাকায় রেলপথ ঝুঁকিতে রয়েছে। দিনের পর দিন এসব রেললাইন ঝুঁকিতে থাকলেও এতে রেলওয়ে কর্মীদের নজর পড়ে না।

এ বিষয়ে কুমিল্লা রেলওয়ের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) হামিদুল হক জানান, যেসব স্থানে এখনো কাঠের স্লিপার রয়েছে, তা পর্যায়ক্রমে রড-সিমেন্টের তৈরি স্লিপার লাগানো হচ্ছে।

সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রাতের আঁধারে যেসব স্থান থেকে দুর্বৃত্তরা এঙ্গেল ক্লিপ খুলে নিচ্ছে, রেলওয়ে কর্মীরা পরবর্তীতে তা লাগানোর ব্যবস্থা নিয়ে থাকে, চলতি অর্থ বছরেই লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেললাইন ডাবল করা হবে।   

কামাল উদ্দিন/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।