ইঞ্জিনে ডিমসহ পাখির বাসা, দেড় মাস বসে থাকলেন ট্রাকচালক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২৩ পিএম, ২০ জুলাই ২০১৯

অতি বাস্তববাদী মানুষও মায়ার বাঁধনের সামনে তুচ্ছ। ভালবাসা ও স্নেহ মানে না কোনো যুক্তি-তর্ক। এই যেমন ইঞ্জিনে ডিমসহ পাখির বাসা দেখে আর ট্রাক চালু করতে পারেননি তুরস্কের ট্রাকচালক বাহাতিন গুরসি। ডিম ফুটে বাচ্চা উড়ে যাওয়া পর্যন্ত ট্রাক নড়বে না, এমন সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যদিও ওই ট্রাকই তার আয়ের একমাত্র উত্স।

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কাছে একটি ছোট্ট শহরে বাড়ি বাহাতিন গুরসির। বাহাতিনের সংসার চলে ট্রাক চালিয়ে। আশপাশের বড় বড় শহরে মালামাল পরিবহনের কাজ করেন তিনি। এ বছর ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরেন বাহাতিন।

বাড়ির সামনে খোলা জায়গায় রেখে দেন ট্রাক। তখনই ট্রাকের ইঞ্জিনে বাসা বাঁধে একটি ছোট্ট মা পাখি। সেই বাসায় ডিমও পাড়ে। তবে বাসা বাঁধা ও ডিম পাড়ার পুরো বিষয় অজানা ছিল ট্রাকচালকের। ছুটি শেষে ট্রাক নিয়ে বের হতে গিয়ে প্রথমে তিনি বিষয়টি লক্ষ্য করেন।

আরও পড়ুন : লুকিয়ে পর্ন দেখছেন? নজর রাখছে ফেসবুক, গুগল

ট্রাকের ইঞ্জিনে দেখেন আস্ত একটি পাখির বাসা। আর তাতে বেশ কয়েকটি ডিম। আশপাশে মা পাখিটিকেও দেখতে পাননি তিনি। ট্রাক চালু করলেই ইঞ্জিনের ঝাঁকুনিতে ভেঙে যাবে বাসা। নষ্ট হবে ডিম। তখনই মনস্থির করে ফেলেন বাহাতিন। যত দিন না ডিম ফুটে বাচ্চাগুলো বড় হয়ে উড়ে না যাবে, তিনিও ততদিন ট্রাক চালাবেন না। তার এই সিদ্ধান্তে সহমত জানায় পরিবারও।

যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। শুরু হল অপেক্ষা। এলাকার বাচ্চারা যাতে বাসাটির কাছে না যায়, সেই দিকে ছিল তার কড়া নজর। এক সময় ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। ৪৫ দিন পর বাচ্চাগুলো উড়তে শিখলে তাদের নিয়ে বাসা ছেড়ে উড়ে যায় মা পাখি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন বাহাতিন।

আরও পড়ুন : স্ত্রীর একাধিক পরকীয়া, কসাই ভাড়া করে টুকরো টুকরো করে হত্যা

এতদিন ট্রাক না চলায় আয় বন্ধ ছিল তার। ফিরিয়ে দিয়েছেন মোটা টাকার ভাড়ার বায়নাও। তাই এবার ট্রাক নিয়ে আবার বের হতে উত্সাহী তিনি। পাশাপাশি ছোট্ট পাখিগুলোকে বড় হওয়ার সুযোগ দিতে পেরে খুশি তিনি।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যমে বাহাতিনের এই মানবিকতার কাহিনী প্রকাশ্যে আসে। তারপরই প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন বাহাতিন। অবশ্য এ নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ তিনি। অনেকদিন পর আবার কাজে ফিরতে পেরে খুশি তিনি।

বাহাতিন বলেন, গত সোমবার বাচ্চাদের নিয়ে উড়ে গেছে পাখিটা। এবার আমি আবার আয় করতে পারব। আমি খুব খুশি। খুশি তার ছোট মেয়ে আয়সিমাও। পাখিগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে সে বলল, পাখি বাসা বানাল বলেই একসঙ্গে এতদিন বাবাকে কাছে পেলাম। আমি খুব খুশি। বাবাকে আমি ভালবাসি। জিনিউজ।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।