শরণার্থী শিশুর মৃত্যুর বর্ণনা শুনে কাঁদলেন কর্তেজ
দেড় বছরের মেয়েকে নিয়ে গুয়াতেমালা থেকে প্রাণ বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রে আসছিলেন। গত বছর মার্কিন অভিবাসন দফতর সেই মাকে আটকে দেয়। তার পরের গল্পটা শুধু হারানোর। যা শুনে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি মার্কিন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য এবং ডেমোক্র্যাট দলের নতুন ‘তারকা’ আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ।
মার্কিন কংগ্রেসের সামনে এক শুনানিতে গুয়াতেমালার শরণার্থী ইয়াসমিন জুয়ারেজ জানিয়েছেন, এক বছর পর হলো কিন্ত মেয়েটা আর তার কাছে নেই। মেক্সিকো সীমান্তের বন্দিশিবিরে ২০ দিন আটক থাকার ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছিল শিশুটির। রোগে ভুগে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যায় সে।
ইয়াসমিনের কথা শুনে শুধু কর্তেজ নন, আরও বেশ কয়েকজন এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন সন্তানহারা ওই মাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসের শুনানিতে মেয়ের সঙ্গে তোলা একটি ছবি সামনে রেখে সাক্ষ্য দিয়েছেন ইয়াসমিন।
তিনি জানিয়েছেন, প্রাণ বাঁচাতে গুয়াতেমালা ছেড়ে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে মেয়ে মারিকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এসেছিলেন তিনি। আশ্রয় চাইলেও তাদের ভয়ানক একটি ঠান্ডা খাঁচায় বেশ কিছু দিন আটকে রাখা হয়। তার পরে পাঠানো হয় অন্য একটি বন্দিশিবিরে। সেখানেই অসুস্থ হয় মেয়ে মারি।
কংগ্রেসের শুনানিতে মেয়ের ছবি পাশে নিয়ে তার মৃত্যুর বিবরণ শোনান ইয়াসমিন জুয়ারেজ। ছবি : এএফপি
ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি চিকিৎসকদের কাছে বারবার অনুরোধ করেছি, আমার মেয়েটাকে একটু দেখুন। কিন্তু তারা দেখেননি। বন্দিশিবির থেকে থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আমি আমার মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে ছুটেছিলাম। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়েছে। মারি আর হাসপাতাল থেকে ফেরেনি।’
মেয়ে হারানো ওই মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আটক শিশুদের রক্ষা করা যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটা দেশের পক্ষে কী এতই কঠিন কাজ? গোটা বিশ্বের জানা উচিত এ সব কিছু।’যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হয়, তা জানতে মার্কিন কংগ্রেসের ‘ওভারসাইট অ্যান্ড রিফর্ম’ কমিটি সাক্ষ্য নিয়েছে ইয়াসমিনের মতো আরও অনেকের।
গত সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দফতরের প্রধান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বন্দিশিবিরে যেভাবে শণার্থীদের রাখা হচ্ছে, তা দেখে তিনি অত্যন্ত মর্মাহত। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষক সংস্থা গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিভিন্ন কেন্দ্রে শরণার্থীদের ভিড় উপচে পড়ছে। মধ্য আমেরিকার হিংসা, দারিদ্র থেকে বাঁচতে গিয়ে এই শরণার্থীরা সীমান্ত পেরিয়ে এসে ‘ভয়ঙ্কর’ অবস্থার মধ্যে দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এসএ/পিআর