লিবিয়ায় মানবিক সংকট চরমে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৯ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৯

বিমান হামলা হচ্ছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। অপরদিকে হামলায় সতীর্থদের মৃত্যুতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আটক অভিবাসীরা। লিবিয়ায় মানবিক সংকট দ্রুত সমাধাণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গত এপ্রিল থেকেই যুদ্ধের কবলে দেশটি।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ত্রিপোলির উপকণ্ঠে তাজৌরা অভিবাসী আটক কেন্দ্রে অনশন করেছেন ৩৬০ জন অভিবাসন প্রত্যাশী। হামলা আর সংঘাতের মধ্যে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সুরক্ষার দাবিতে এ অনশন চলছে তাদের। গত সপ্তাহে ওই কেন্দ্রে বিমান হামলায় ৫০ জন নিহত এবং ১৩০ জন আহত হয়েছিলেন।

গত এপ্রিল থেকে লিবিয়ায় ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ঐক্যমতের সরকারের’ বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এলএনএ)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) জানিয়েছে, চলমান ওই যুদ্ধে এ পর্যন্ত এক হাজার নিহত এবং সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

অভিবাসন কেন্দ্রে দুটি বিমান হামলার জন্য খলিফা হাফতারের বাহিনীকে দায়ী করে আসছে সরকার। যদিও হাফতার সেটি অস্বীকার করে আসছে। অভিবাসী আটক কেন্দ্রে ‘ভয়ঙ্কর আক্রমণের’ কঠোর নিন্দা জানিয়ে লিবিয়া সংকটের রাজনৈতিক সমাধান বের করে আনার আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল।

মঙ্গলবার রাজধানী বার্লিনে এক কূটনৈতিক সংবর্ধনায় লিবিয়ায় অস্ত্র রফতানি বন্ধে এবং ত্রিপোলিতে ‘নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির’ জন্য সব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। লিবিয়া যাতে আরেকটি সিরিয়া না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক করেন মেরকেল।

জার্মান চ্যাঞ্চেল বলেন, ‘বিদেশি শক্তিগুলো থেকে লিবিয়ায় প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র গেছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি যাতে আর না বাড়ে, সেজন্য অস্ত্র রফতানিতে এখনই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।’

তাজৌরা আটক কেন্দ্রের মুখপাত্র মাহমুদ তাবির বলেন, আরও হামলার ভয়ে রাতে ঘরের মধ্যে ঢুকতে চাইছেন না অভিবাসীরা। কারণ আগের হামলায় সেখানে ভবন ধসে অনেকের মৃত্যু হয়। জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দল এসে অনশন ভাঙাতে চাইলেও অভিবাসীরা রাজি হননি বলে জানিয়েছেন তিনি।

মুখপাত্র তাবীর আরও জানান, অন্য কোনো কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হলে লিবিয়া থেকে দেশে পাঠানোর সময় বিলম্বিত হবে, এমন আশঙ্কায় তাজৌরা অভিবাসী আটক কেন্দ্রও ছাড়তে চাইছেন না তারা। এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার অন্যতম রুট লিবিয়া। এর মধ্যে দেশটির কোস্টগার্ডের হাতে আটককৃতদের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে রাখা হয়।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, লিবিয়ার আটক কেন্দ্রগুলোতো এখন পর্যন্ত মোট পাঁচ হাজার ২০০ জন অভিবাসন-প্রত্যাশী আটক রয়েছেন। যুদ্ধের কারণে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন অনেক মানুষ। গত তিন মাসে লিবিয়ায় আহতদের এক হাজার ৭০০ জনের অস্ত্রোপচার করার কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।