একটি গরুর মালিকানা দাবি দু’জনের, শেষ পর্যন্ত মেডিক্যাল টেস্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:২৪ পিএম, ০৪ জুলাই ২০১৯

গরুটির নাম লক্ষ্মী। এর মালিকানা দাবি করেছে দু’জন। কিন্তু কেউই দাবির পক্ষে নিরেট প্রমাণ দিতে পারেননি। ফলে প্রকৃত মালিক কে, তা জানতে শুরু হয় নানা জল্পনা। শেষ পর্যন্ত প্রকৃত মালিক নির্ধারণে গরুটিকে নেয়া হলো হাসপাতালে। মেডিক্যাল টেস্টের পর চূড়ান্ত করা হবে আসলে গরুটির মালিক কে?

গরুর মালিকানা নিয়ে সৃষ্ট এই জটিলতা দেখা দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায়। এই গবাদি পশুর প্রকৃত মালিক চিহ্নিত করা নিয়েই শুধু জটিলতাই তৈরি হয়নি। বরং লক্ষ্মী বকনা গরু না গাভী তা নিয়েই ধন্দ তৈরি হয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে স্থানীয় প্রশাসন লক্ষ্মীর দুই দাবিদারকে ভাতার থানা পুলিশের কাছে লক্ষ্মীর মেডিকেল টেস্ট করানোর পরামর্শ দিয়েছে। মেডিকেল টেস্টের দিন নির্ধারণ না হওয়ায় গোয়ালঘর ছেড়ে ভাতার থানাতেই ঠাঁই হয়েছে লক্ষ্মীর।

পুলিশ বলছে, ভাতারের বলগোনা গ্রামের বাসিন্দা সুনীল থোমের দাবি লক্ষ্মী নামের গরুটি তার। তিনি বলেন লক্ষ্মী গাভী। অপরদিকে ভাতারের নিত্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের পাটনা গ্রামের বাসিন্দা শেখ আফজলুন হক দাবি করছেন, গরুটি তার। তিনি বলছেন, গরুটি বকনা।

গত সোমবার সকালে গরুর দুই দাবিদারই হাজির হন ভাতার থানায়। গরুর মালিকানা নিয়ে দিনভর আলোচনা চললেও কোনো ধরনের মীমাংসায় পৌঁছানো যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে গরুর আসল মালিকের হদিশ পেতে দু'পক্ষই গরুর মেডিক্যাল টেস্ট করানোর দাবি তোলেন। পুলিশও তাদের দাবিতে রাজি হয়েছে।

আফজলুন হক বলেন, কিছুদিন আগে তার পোষা গরুটি হারিয়ে যায়। গরু খুঁজতে খুঁজতে তিনি ভাতারের বলগোনা গ্রামে হাজির হন। গ্রামের নতুনপাড়া এলাকায় রাস্তার ধারে গাছের তলায় বসে বসে জাবর কাটতে থাকা গরুটিকে দেখে তিনি চিনতে পারেন। এরপর খোঁজ খবর নেয়া শুরু করতেই তিনি জানতে পারেন নতুন পাড়ার বাসিন্দা সুনীল থোম গরুটি পুষছেন।

যদিও সুনীল থোমের দাবি, কারো হারিয়ে যাওয়া গরু তিনি নিজের বাড়িতে নিয়ে যাননি। যে গরুর কথা আফজলুন বলছেন, সেই গরুটি তাদের পোষা আদরের গরু। তার নাম লক্ষ্মী। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে গাভী লক্ষ্মী তাদের বাড়ির পোষ্য হয়ে রয়েছে বলে জানান সুনীল। গরুর মালিকানা দাবি করে এরপর দু'পক্ষই ভাতার থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন।

ভারতীয় একটি দৈনিক বলছে, গরুর মেডিক্যাল টেস্ট করানোর দাবিতে দু’পক্ষ স্বাক্ষর করে ভাতার থানায় লিখিত আবেদন জানিয়েছে। তদন্তে নেমে ভাতার থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলগোনা গ্রামে যান। সেখানে পৌঁছে তিনিও গরুর মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধের মীমাংসা করতে ব্যর্থ হন।

শেষে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে সোমবার সকালে লক্ষ্মীকে হাজির করা হয় থানায়। উভয়পক্ষ নানান চিহ্ন দেখিয়ে দাবি করেন লক্ষ্মী তার। কার দাবি সত্য, তা নির্ধারণে লক্ষ্মীর দুই দাবিদারই লক্ষ্মীর মেডিক্যাল টেস্ট করানোর সিদ্ধান্তে উপনীত হন। পুলিশ তাতে সহমত হওয়ায় আপাতত লক্ষ্মী ভাতার থানায় বহাল তবিয়তে দিন কাটাচ্ছে। তবে মেডিকেল টেস্টের পর কার গোয়ালে ঠাঁই হয় লক্ষ্মীর সেদিকেই তাকিয়ে এখন গরুটির দাবিদার দুই মালিক।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।