তিন সপ্তাহেও স্বাভাবিক হয়নি কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুট
পদ্মায় নাব্যতা সংকট ও তীব্র স্রোতের কারণে কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটে গত তিন সপ্তাহ ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এই রুট হয়ে যাত্রীবাহী নৈশকোচ ও পণ্যবাহী পরিবহন রাজধানী ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে না। এতে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ। এ অচলাবস্থা কাটাতে পণ্যবাহী পরিবহনগুলোকে কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুট পরিহার করে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে পার হতে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ২ সেপ্টেম্বর থেকে পদ্মা সেতুর কাজে নিয়োজিত চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির শক্তিশালী ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করলেও কবে নাগাদ সম্পূর্ণ সচল হবে তা বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। যে কারণে আসন্ন ঈদে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে এ রুটের পরিবহন ব্যবস্থা।
কাওড়াকান্দি ঘাটের সংশ্লিষ্টরা ও আটকে পড়া ট্রাক চালকরা জানান, গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে এই নেরুট অচল হয়ে পড়েছে। এ রুটে চলাচলকারী ১৮টি ফেরির মধ্যে নাব্যতা সংকটের কারণে চারটি রোরো ফেরিসহ ১৪টি ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা নদীতে বর্তমানে সাত নটিক্যাল মাইল গতিতে অর্থ্যাৎ ১৪ কিলোমিটার গতিতে তীব্র স্রোত বইছে। এর মধ্যে ফেরিগুলো চলতে সমর্থ্য নেই। এ নৌরুট সচল রাখতে নাব্য সংকট কাটাতে দেশিয় ড্রেজার দিয়ে খনন কাজ চালাতে পারেনি স্রোতের কারণে।
ডুবোচর কাটার জন্য দেশের ড্রেজারগুলো ছোট। এই তীব্র স্রোতে সেগুলো খনন করতে পারেনি। ফেরি সংকট থাকায় এ রুটে চলাচলকারী নারী ও শিশুদের নিয়ে যাত্রীরা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে লঞ্চ ও স্পিডবোটে চলাচল করছে। ঘূর্ণি স্রোতের কারণে হাজরা চ্যানেল মুখে খুব দ্রুত পলি জমাট হচ্ছে।
এ অবস্থায় পদ্মা সেতুর কাজ পাওয়া চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির ব্যবহৃত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ড্রেজার দিয়ে পলি খননের ব্যাপারে নৌ মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়। পদ্মা সেতুর শক্তিশালী ড্রেজার ২ সেপ্টেম্বর থেকে খনন কাজ শুরু করেছে। খনন কাজ শুরু করলেও ঘূর্ণি স্রোতের কারণে ২/৩ দিনের মধ্যে জায়গার পলি মাটি আবার জায়গায় ফিরে আসছে। যে কারণে নাব্যতা সংকট দূর হচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে আসন্ন ঈদে ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়বে দেশের ব্যস্ততম এই নৌরুট।
কাওড়াকান্দি ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ম্যানেজার শাহনেওয়াজ চৌধুরী জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে পদ্মা সেতুর কাজ পাওয়া চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ড্রেজার দিয়ে পলি খনন কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। আশা করা যায় অতি দ্রুত ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে।
এ কে এম নাসিরুল হক/এআরএ/বিএ