কেবল মহারাষ্ট্রেই দিনে ৮ কৃষক আত্মহত্যা করে!
ভারতে মহারাষ্ট্র প্রদেশে গত চার বছরে ১২ হাজার ২১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। যা তার আগের চার বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। মহারাষ্ট্রের প্রাদেশিক ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী সুভাষ দেশমুখ বিধানসভায় ভয়াবহ এই তথ্য জানিয়েছেন।
ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ওঠা প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য দেন সুভাষ দেশমুখ। মন্ত্রীর দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ হাজার ২৬৮ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ২১ জনে।
কৃষকের আত্মহত্যার পেছনে প্রথম কারণ হচ্ছে, প্রত্যেক কৃষকের ঘারে বিশাল ঋণের ফাঁদ। অন্য কারণগুলো হলো শস্যের অপর্যাপ্ত ফলন এবং সেসবের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া। এছাড়া ভারতে তথাকথিত প্রবৃদ্ধি হলেও কৃষকের দিকে সরকারের নজর না দেয়া আরেকটি বড় কারণ।
আরও পড়ুন>> মুসলিম ছেলেটা ‘জয় হনুমান’ বলেও বাঁচল না
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত চার বছরে যে ১২ হাজার ২১টি মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ৫৭ শতাংশের ক্ষেত্রে সরকারের খেয়ালি। কেননা দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, আত্মহত্যা করা এসব কৃষক সরকারের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা সাহায্য পাওয়ার উপযুক্ত।
গত চার বছরে বেশ কয়েকবার কৃষকরা মুম্বাই পর্যন্ত মিছিল করে এসেছে তাদের দাবির কথা তুলে ধরতে। কিন্তু সরকারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও মহারাষ্ট্রের কৃষক মৃত্যু হ্রাসের ক্ষেত্রে কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। বরং সুভাষ দেশমুখের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে ৬১০ জন কৃষককে আত্মহননের পথই বেছে নিতে হয়েছে।
আত্মহননের মাধ্যমে এই মৃত্যুর মিছিলের জন্য সরকারি প্রকল্পগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সরকারের দাবি, কৃষকের জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কৃষিভিত্তিক নানা প্রকল্পে খরচ করা হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের ঋণ মওকুফ প্রকল্পও কৃষক আত্মহত্যায় রাশ টানতে পারেনি। ১২ হাজার ২১ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৫০০টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালের জুন মাসে ওই প্রকল্প চালু হওয়ার পর।
এসএ/এমএস