তিন সপ্তাহ সাগরে ভাসার পর দেশে ফিরতে রাজি সেই ৬৪ বাংলাদেশি
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিসিয়ার সাগরে ভাসছেন ৭৫ জন শরণার্থী। কয়েক সপ্তাহ আগে তিউনিসিয়ায় শরণার্থী বোঝাই একটি নৌকা আটকা পড়ে। ওই নৌকায় থাকা ৭৫ শরণার্থীর মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি।
ওই নৌকাটি তিউনিয়ার উপকূলের কাছে পৌঁছানোর পর কর্তৃপক্ষ এটি তীরে ভেরার অনুমতি দেয়নি। ফলে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নৌকা নিয়ে সাগরেই অবস্থান করছিল শরণার্থীরা। তবে শরণার্থী কেন্দ্রে জনাকীর্ণ অবস্থা হওয়ায় প্রথমদিকে ওই শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে চায়নি তিউনিসিয়া।
বুধবার রেড ক্রিসেন্টের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে, তিন সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসার পর এখন ওই শরণার্থী বোঝাই নৌকাটিকে তীরে ভেরার অনুমতি দিয়েছে তিউনিসিয়া। এতে করে শরণার্থীরা তাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারবে।
গত মাসে তিউনিসিয়ার উপকূল থেকে ওই শরণার্থীদের উদ্ধার করে একটি মিসরীয় নৌকা। তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ তখন বলেছিল যে, তাদের শরণার্থী কেন্দ্রে জনাকীর্ণ অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে আর কোন শরণার্থীদের জায়গা দেয়া সম্ভব নয়। ফলে ওই নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান নেয়।
রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা মোংগি স্লিম রয়টার্সকে বলেন, তিন সপ্তাহ ধরে কঠিন সময় পার করার পর অবশেষে ওই নৌকাটিকে তিউনিসিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। এছাড়া ওই নৌকায় থাকা শরণার্থীরাও আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দেশে ফিরে যেতে রাজি হয়েছেন।
৭৫ শরণার্থীর ওই দলটিতে ৬৪ জনই বাংলাদেশি। অপরদিকে এদের মধ্যে নয়জন মিসরের এবং একজন মরক্কো এবং আরও একজন সুদানের নাগরিক।
তিউনিসিয়ার তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, খুব দ্রুত এই শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তবে এর মধ্যে সুদানের নাগরিককে সেখানেই আশ্রয় দেয়া হবে কারণ তিনি ফিরে যেতে চাচ্ছেন না।
মানব পাচারকারীদের মাধ্যমে আফ্রিকান শরণার্থীদের ইউরোপে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রধান একটি পয়েন্ট হচ্ছে লিবিয়া উপকূল। এই উপকূল দিয়েই সবচেয়ে বেশি শরণার্থী ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে।
গত মাসে ইউরোপের উদ্দেশে লিবিয়া ছেড়ে যাওয়া একটি নৌকা উল্টে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে কমপক্ষে ৬৫ শরণার্থীর মৃত্যু হয়।
চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এই রুটেই প্রায় ১৬৪ শরণার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। গত কয়েক বছরের প্রথম কয়েক মাসের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে প্রতি তিনজনের একজন মারা যাচ্ছে।
টিটিএন/জেআইএম