মোদির মন্ত্রিসভায় সারেঙ্গি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ৩১ মে ২০১৯

দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। মোদির পর তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পাঠ দেখতে দেখতে দর্শক সারিতে বসে অনেকেই যখন ক্লান্ত, ঠিক তখনই যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল রাইসিনার উঠোনে।

রাত সাড়ে ৮টায় রাষ্ট্রপতির সচিব যেই ঘোষণা করলেন, ‘রাজ্য মন্ত্রী হিসাবে এ বার শপথ নেবেন শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি..’। ওমনি হাততালির ঢেউ উঠল! কে ইনি? একেবারেই সাধারণ গোছের সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা। মাথার চুল উস্কো খুস্কো, হাওয়ায় উড়ছে!

হ্যাঁ, তাকে নিয়ে উন্মাদনা এমনই। সামাজিক মাধ্যমে তার লক্ষ লক্ষ ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ শহুরে জীবনের চাকচিক্য, বিলাস, সুবিধা থেকে তিনি অনেক দূরে। বালাসোরের এক ঝুপড়ি বাড়িই তার স্থায়ী ঠিকানা।

modii

এবার লোকসভা নির্বাচনে ওড়িশার বালাসোর আসন থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গি। তার রাজ্যের মানুষ তাকে বলেন, ‘ওড়িশার মোদি’। বালাসোরে বিজু জনতা দলের প্রার্থী রবীন্দ্র কুমার জেনাকে তিনি হারিয়েছেন ১২ হাজার ৯৫৬ ভোটে।

তবে এ জয়টাই তার বড় সাফল্য নয়। প্রতাপ ওড়িশার বহু মানুষের মন জয় করেছিলেন অনেক আগেই। দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতি করলেও একটা সাইকেল ছাড়া তার কোনো বাহন নেই। আর থাকার জায়গা বলতে খড়ে ছাওয়া একটা কুঁড়ে ঘর। অবিবাহিত প্রতাপ বাবু সেই বাড়িতেই থাকতেন মায়ের সঙ্গে। গত বছর তার মা মারা গেছেন। এখন একা। গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাই তার অবসরের সঙ্গী। আদ্যন্ত সরল একটা মানুষ বলেই গ্রামের মানুষের কাছেও ঘরের লোক তিনি।

ওড়িশার নীলগিরির গোপীনাথপুর গ্রামের এক গরীব পরিবারে ১৯৫৫ সালে জন্ম প্রতাপের। স্থানীয় ফকির কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। ছেলেবেলা থেকে আধ্যাত্মিক বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন তিনি। সাধু হয়ে দেশ সেবা করার জন্য একবার চলেও গেছিলেন হাওড়ার বেলুড় মঠে। কিন্তু মঠের সন্ন্যাসীরা যখন জানলেন তার বাবা মারা গেছেন, বাড়িতে তার মা একা, তখন তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেন মায়ের সেবা করার জন্য।

modii

তবে মঠের সাধু না হয়েও সংসারে থেকে তার জীবন কোনো সাধুর থেকে কম নয়। স্থানীয়রা বলেন, উনি শিব জ্ঞানে জীবের সেবা করেন। গণশিক্ষা মন্দির যোজনার অধীনে প্রতাপ সারঙ্গি ময়ুরভঞ্জ ও বালাসোরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় দুঃস্থ শিশুদের জন্য অনেক স্কুলও গড়েছেন। এছাড়া এলাকার সার্বিক উন্নয়নে তার অবদান কম নয়।

লোকসভার এমপি হওয়ার আগে প্রতাপ সারঙ্গি ওড়িশার নীলগিরি বিধানসভা আসন থেকে দুইবার (২০০৪ ও ২০০৯) নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবার লোকসভা নির্বাচনে প্রতাপ সারঙ্গি জয় পাওয়ায় খুব খুশি নরেন্দ্র মোদি। মোদি যখনই ওড়িশায় যেতেন, তখনই সারঙ্গির সঙ্গে দেখা করতেন। কেননা দুজনেই গিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের সাধু হতে, দুজনকেই সন্ন্যাসীরা ফিরিয়ে দিয়েছেন।

এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।