অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন


প্রকাশিত: ০৪:২৬ এএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

রাজশাহীতে ২৫ গরু ব্যবসায়ীর অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে জ্ঞান হারানোর বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সামনে ঈদ। ঈদ মৌসুমকে সামনে রেখে তৎপর হয় নানা অপরাধী চক্র। রাজশাহীর ঘটনাটি সে রকম ইঙ্গিত দিচ্ছে। শুরুতেই এসব দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে এদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা সহজ হবে।আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সক্রিয়ভাবে ভেবে দেখতে হবে।

এ সংক্রান্ত সংবাদ থেকে জানা যায়, ঢাকা থেকে নাইট কোচে রাজশাহীতে পৌঁছে ২৫ গরু ব্যবসায়ী সিটি হাটে অবস্থিত স্থানীয় একটি হোটেলে ভাত খান। ভাত খেয়ে টিস্যু দিয়ে মুখ মুছেন। এর কিছ্ক্ষুণ পরেই তারা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এদের ছয়জনকে দ্রুত উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। বাকিদের বিভিন্ন ক্লিনিক ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। রোববার সকালের এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।  উদ্বেগের মধ্যেও স্বস্তির জায়গা হচ্ছে এ যাত্রা অল্পের ওপর দিয়ে বাঁচা গেছে। রক্ষা পেয়েছে গরু ব্যবসায়ীদের জীবন । ঘটনা জানাজানি হওয়ায় অর্থও খোয়া যায়নি।

অজ্ঞান পার্টির অপতৎপরতা নতুন কোনো বিষয় নয়। খোদ রাজধানীতেই ব্যাপকসংখ্যক অজ্ঞান পার্টি তৎপর রয়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। কোনো উৎসব বা পার্বণে এদের অপতৎপরতা আরও বেড়ে যায়।  কোরবানির ঈদে গরুর হাটকে কেন্দ্র করে এই চক্র ইতিমধ্যেই  তাদের অপতৎপরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সময় আর্থিক লেনদেন বেশি হয়। তাই সুযোগ সন্ধানীরা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এই সময়টাকেই বেছে নেয়। বিশেষ করে গরুর হাটে জাল টাকার ছড়াছড়িও বেড়ে যায় এ সময়।

এছাড়া সারা বছর ধরেই থাকে অজ্ঞান পার্টির অপতৎপরতা। এদের কবলে পড়ে কতোজন যে সর্বস্ব হারিয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। অনেকের জীবন পর্যন্ত গেছে। সম্প্রতি নারী সদস্যসহ অজ্ঞানপার্টির কয়েকজন  সদস্যকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনা যেমন ঘটে তেমন দুর্বৃত্তরা আটকও হয় মাঝেমধ্যে। তবে এদের তৎপরতা বন্ধ হয় না। ফলে মানুষজনকে এর মাশুল দিতেই হচ্ছে। এর মধ্যে কোথায় যেন একটি ফাঁক রয়ে গেছে। কোনো ছিদ্র রেখে সেই পাত্রে যতই পানি ঢালা হোক না কেন পাত্র কোনোদিনই ভরবে না। তাই দুর্বৃত্তদের যথাযথ শাস্তি না হলে এদের অপতৎপরতাও বন্ধ করা যাবে না।

অনেকেই ধরা পড়ে, কিন্তু জেলহাজত থেকে তাদের বের হতেও বেশি সময় লাগে না। সাক্ষীর অভাব, মামলা পরিচালনায় গাফিলতিসহ নানা অভিযোগের তীর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকে। তাই কিভাবে দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এই চক্রটি যাতে কোনোভাবেই সক্রিয় হয়ে উঠতে না পারে সেজন্য মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। গরু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপই নিতে হবে। বিশেষ করে জালটাকার ছড়াছড়ি বন্ধ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কোনো বিকল্প নেই।   

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।