নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার কাশ্মীরের ৭০ ভাগ বেসামরিক
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, গত ২৮ বছরে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে যাদের নির্যাতন করা হয়েছে তাদের ৭০ শতাংশই সাধারণ নাগরিক।
চারশো জনেরও বেশি নির্যাতিত ব্যক্তির লিখিত জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে তৈরি এক প্রতিবেদনে যৌনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া দেয়া, লোহার শিক ঢোকানো বা হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে রাখার মতো নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কাশ্মীরে কাজ করছেন এমন ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে মনে করছেন।
আরও পড়ুন > আমিরাতে প্রবাসীদের স্থায়ী বসবাসের সুযোগ
কাশ্মীর কোয়ালিশন অব সিভিল সোসাইটিজ নামের ওই সংগঠনটি বলছে, ১৯৯০ সাল থেকে সেনাসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে তা অভাবনীয়। নির্যাতিতদের মধ্যে উগ্রপন্থী বা সাবেক উগ্রপন্থীরা আছে ঠিকই কিন্তু ৭০ শতাংশই হচ্ছে বেসামরিক নাগরিক।
সংগঠনটির প্রধান পারভেজ ইমরোজ বিবিসিকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হবার পর লোকজনের নিখোঁজ হওয়া বা নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট হয়েছে। কিন্তু নির্যাতনের ঘটনাগুলো নিয়ে রিপোর্ট হয়নি। কিন্তু তথ্য ঘাঁটতে গিয়ে দেখা গেছে এরকম হাজার হাজার ঘটনা রয়েছে।
পারভেজ ইমরোজ বলেন, এর কোন বিচার হয় না কারণ আইন করে নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হওয়া ৪৩২ জনের লিখিত বিবৃতি সংগ্রহ করেছে সংগঠনটি।
তারা যে সব নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন তার মধ্যে চড়-থাপ্পড়, লাথি, গালিগালাজ যেমন আছে - তেমনি আছে যৌনাঙ্গে বিদ্যুতের শক দেয়া, মলদ্বারে মরিচের গুঁড়ো বা লোহার রড ঢুকিয়ে দেয়া, উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা বা নগ্ন করে তল্লাশির মতো ঘটনাও।
তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর জেনারেল কে কে গাঙ্গুলি বলেন, এরকম নির্যাতন হতেই পারে না। এসব অভিযোগের সবটাই বানানো। তিনি কাশ্মীরে বেশ কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি না। ভারতীয় বাহিনীর ইন্টারপ্রিটেশনে টর্চার নেই।
তবে পারভেজ ইমরোজ বলেন, যে কর্মকর্তারা এসব অস্বীকার করছেন তারা যদি বিবৃতি দেন তাহলে তার সংগঠন খুঁজে বের করবে যে, ওই কর্মকর্তারা কাশ্মীরে থাকাকালীন কোন মানবাধিতার লংঘনের ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন কি-না।
আটক হওয়া লোকেরা নির্যাতনের কথা বাড়িয়ে বলছেন কি-না সে বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরোজ বলেন, তারা কেন বানিয়ে বলবে? তারা বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, নির্যাতনের ক্ষতচিহ্নগুলো দেখা হয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথেও কথা বলা হয়েছে। তাদের যে চিকিৎসা হয়েছে সেসব নথিও খতিয়ে দেখা হয়েছে।
টিটিএন/জেআইএম