মোদির কাছে নির্বাচন কমিশন আত্মসমর্পণ করেছে : রাহুল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ২০ মে ২০১৯

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হতেই ফের আক্রমণের মুখে দেশটির নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে একসময় মানুষ ভয় পেত, সম্মান করত কিন্তু আর সেদিন নেই। তারা মোদির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এবারের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের বড় অভিযোগ ছিল, নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে বারবার নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া। তা নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসা। তিনি কমিটির বৈঠক থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী আজ (সোমবার) বলেন, ‘নির্বাচনী বন্ড, ইভিএম, ভোটগ্রহণের দিনক্ষণ, নমো টিভি, মোদির সেনা, কেদারনাথের নাটকের মতো ঘটনা থেকে শ্রী মোদি ও তার দলের সামনে নির্বাচন কমিশনের আত্মসমর্পণ সব ভারতীয়ের কাছে স্পষ্ট। নির্বাচন কমিশনকে সাধারণত ভয় ও সম্মান করা হত। এখন আর তা করা হয় না।’

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও চিঠি লিখে লাভাসার কথায় কান না দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দুষেছেন। তার অভিযোগ, ‘অশোক লাভাসার মতো সংখ্যালঘু হলেও তাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল। নাইডুর যুক্তি এবং সংখ্যালঘু মতকে গুরুত্ব না দেয়ার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের মতো সংস্থাকে মানায় না। এ থেকেই স্পষ্ট, প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘গত দুদিনে প্রধানমন্ত্রী তার তীর্থযাত্রায় ভোটারদের প্রভাবিত করতে ধর্ম ও ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করেছেন। এতদিন আমাদের অভিযোগ ছিল, কমিশন ঘুমিয়ে রয়েছে। এবার আমরা বলতে পারি, কমিশন পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করেছে, যা খুবই লজ্জাজনক।’

গতকাল রোববার শেষ দফার ভোটগ্রহণে বিরোধীদের অভিযোগ, আচরণবিধি মেনে প্রচার শেষ হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেদারনাথ মন্দিরে গিয়ে ধ্যানে বসে মূলদ ভোটের প্রচারই করেছেন। তা সত্ত্বেও চোখ বুজে থেকেছে নির্বাচন কমিশন।

ভোট শেষ হওয়ার পর মোদি আজ সোমবার নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাকে মন্দিরে পূজা এবং ধ্যানের অনুমতি দেয়ার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর দফতর কমিশনের অনুমতি চেয়েছিল। কমিশন অনুমতি দিলেও আদর্শ আচরণবিধি এখনও বলবৎ রয়েছে বলে মনে করিয়ে দিয়েছিল।

দেশটির বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেদারনাথ মন্দিরে থাকলেও পুরোটা সময় টিভিতে উপস্থিত ছিলেন। গোটা দেশে তো বটেই, তিনি যে কেন্দ্র থেকে কালকের ভোটে লড়েছেন উত্তর প্রদেশের সেই বারানসির জন্য ভোটের প্রচার চালিয়েছেন।

বিজেপি নেতাদের পাল্টা যুক্তি, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর কমিশনকে নিশানা করে কংগ্রেস নেতৃত্ব আসলে নিজের হতাশা প্রকাশ করছেন। ভোটে হার স্পষ্ট বুঝে কমিশনের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছেন তারা।

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নির্বাচন হিসেবে ভারতের সাত দফার লোকসভা নির্বাচন শুরু হয় গত ১১ এপ্রিল। গতকাল রোববার সপ্তম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় দেড় মাসের নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হয়। আগামী ২৩ মে বৃহস্পতিবার ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

ইন্ডিয়া ট্যুডের বুথ ফেরত জরিপের ফলাফল অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, লোকসভার মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোট ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ৩৩৯ থেকে ৩৬৫টি এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) ৭০ থেকে ১০৮টি আসন পেতে পারে। সরকার গঠনে প্রয়োজন ২৭২টি আসন।

এসএ/এমকেএইচ

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।