জরিপের ফল আসতেই থমকে গেল বিরোধীদের মহাজোট গঠন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৩১ পিএম, ২০ মে ২০১৯

লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) ঠেকাতে ভারতের প্রধানবিরোধী দল কংগ্রেসের নেতৃত্বে মহাজোট গঠনের তৎপরতায় ভাটা পড়েছে। উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের প্রধান রাহুল গান্ধী ও চেয়ারপাসন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু রোববার ভোটগ্রহণ শেষে বুথ ফেরত জরিপের ফল আসার পর এই বৈঠক বাতিল করেছেন মায়াবতী।

তবে তার এই বৈঠক বাতিলের খবরের ব্যাপারে পরস্পর বিপরীতমুখী তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে বলছে, বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য সোমবার নয়াদিল্লিতে আসছেন না মায়াবতী।

দেশটির বিরোধীদলগুলোকে একই পাটাতনে নিয়ে এসে মোদিবিরোধী মহাজোট গঠনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হতো মায়াবতীর বৈঠকের এই উদ্যোগকে। সোমবার বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) নেতা ও মায়াবতীর শীর্ষ সহযোগী সতিশ চন্দ্র মিশ্র দেশটির সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেছেন, দিল্লিতে আজ (সোমবার) মায়াবতীর কোনো অনুষ্ঠান কিংবা বৈঠক নেই। তিনি আজ লখনৌতে থাকবেন।

আরও পড়ুন : ভারতের নির্বাচনী ফলে ২০০৪ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কি?

১৭তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট শেষে দেশটির বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যমের বুথ ফেরত জরিপে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) জোটের ভূমিধস জয়ের আভাস আসার একদিন পর মায়াতী কংগ্রেসের শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে তার বৈঠক বাতিল করলেন। তবে সোমবার সকালের দিকে তিনি লখনৌতে মায়াবতী তার জোটসঙ্গী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

তবে ২৩ মে (বৃহস্পতিবার) আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগে মায়াবতী রাহুল এবং সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন বলে দেশটির কিছু গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর মধ্যস্থতায় মায়াবতী কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছেন।

নাইডু লখনৌতে মায়াবতীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর আগে অন্তত দুবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন অন্ধ্রপ্রদেশের এই মুখ্যমন্ত্রী। রোববার নয়াদিল্লিতে রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন তেলেগু দেশম পার্টির নেতাও।

আরও পড়ুন : বৃহৎ ৩ রাজ্যের আভাসে তারতম্য, পাল্টে যেতে পারে হিসাব

সোমবার আরো পরের দিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় লোকসভা নির্বাচনের বুথ জরিপের ফলে বিজেপির জয়ের আভাসকে গল্প বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

রোববার ভারতের এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা ম্যারাথন ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এর পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যমের জরিপে বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি ভূমিধস জয়ে আবারও ক্ষমতায় ফিরছে বলে আভাস দিয়েছে।

৫৪৩ আসনের লোকসভায় বিজেপি ৩ শতাধিক আসনে জয়ী হতে যাচ্ছে বলে প্রায় সব বুথ ফেরত জরিপেই বলা হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং জোটসঙ্গীরা ১২২টি আসন পেতে পারে। এছাড়া প্রধান এই দুই দলের বাইরের দলগুলো পেতে পারে ১১৭ আসন।

লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটের আগেই ক্ষমতাসীন বিজেপিবিরোধী মহাজোট গঠনে তৎপর হয়ে উঠে দেশটির প্রধানবিরোধী দল কংগ্রেস। আগামী ২৩ মে ভোটের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই এই তৎপরতা দৃশ্যমান হয়।

আরও পড়ুন : বুথ ফেরত জরিপ : বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মমতা

বুথ ফেরত জরিপের ফল আসার আগেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জোটসঙ্গী হিসেবে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক দল দ্রাভিড়া মুন্নেট্রা কাড়াগাম (ডিএমকে, ওড়িশার বিজেডি, অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং তেলেঙ্গানার রাষ্ট্র্র সমিতির (টিআরএস) মতো আঞ্চলিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে মহাজোট গঠনে যোগাযোগ করে কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধী ঐক্যকে অটুট করে তোলার লক্ষ্যে কংগ্রেস এই প্রচেষ্টা শুরু করে।

এছাড়া বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের স্থানীয় জনতা দল (সেকুলার), মহারাষ্ট্রের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কংগ্রেস। এবারের নির্বাচনে মোদিকে হারানোর লক্ষ্যে এসব দলের সঙ্গে মহাঐক্য গড়ার কাজ শুরু করে দলটি।

এসআইএস/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।