লক্ষ্মীপুরে কোটি টাকার কাজ ভাগাভাগি করলো ছাত্রলীগ
লক্ষ্মীপুরে এক কোটি ১৬ লাখ টাকার ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগি করে নিয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা। বৃহস্পতিবার জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে দুইটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এ সংস্কারের কাজ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
নিয়ম রক্ষার জন্য ছাত্রলীগ নেতারা পাতানো দরপত্র দাখিল করেন। আর এজন্য সকাল থেকে ওই কার্যালয় ও তার আশপাশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মহড়া দেন।
এদিকে সাধারণ ঠিকাদারদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের দরপত্র দাখিল করতে দেয়নি। কার্যালয়ের ভেতরে কয়েকজন ঠিকাদারকে বাধা দেয়া হয়েছে। অনেককে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার কারণে প্রাণ ভয়ে দরপত্র দাখিল না করে কার্যালয় থেকে ফিরে গেছেন।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, সম্প্রতি জেলার রামগঞ্জের নারায়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও রামগতির হাজী গফুর উচ্চ বিদ্যালয় ভবনের সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। বুধবার দরপত্র বিক্রি ও বৃহস্পতিবার দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল। দুইটি কাজের বিপরীতে ৩১টি দরপত্র বিক্রি হয় বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এ কাজের জন্য যে সব ঠিকাদাররা দরপত্র সংগ্রহ করেছেন, তাদের দাখিল না করতে জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা কঠোরভাবে বলে দিয়েছেন। সকালে কয়েকজন ঠিকাদার অফিসে আসলেও তাদের দরপত্র দাখিল করতে দেয়া হয়নি।
সদর উপজেলার এক ঠিকাদার জানান, ছাত্রলীগ নেতারা রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈকত মাহমুদ শামছু ও রামগতি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন হেলালকে কাজগুলো পাইয়ে দিতে প্রত্যেকটি বিপরীতে ৩/৪টি করে দরপত্র দাখিল করা হয়। নিয়ম রক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাস বলেন, আমি সকালে কলেজে যাওয়ার পথে দলীয় কিছু নেতাকর্মীকে সেখানে দেখেছি। টেন্ডারের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে মহড়া দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে রাত সাড়ে ৭টায় জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদতরের নির্বাহী প্রকৌশলী দিপংকর খিসার মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) মো. জুনায়েত কাউছার বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়ো হওয়ার খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পাঠানো হয়েছিল। ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
কাজল কায়েস/এআরএ/পিআর