ফণীর তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে উপকূল খালি করার নির্দেশ
বঙ্গোপসাগরে শক্তি বাড়িয়ে সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। উত্তাল হয়ে উঠছে সাগর। ঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে ভারতের ওড়িশার পর পশ্চিমবঙ্গের সব উপকূল খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সৈকত সংলগ্ন শহরের সব হোটেল থেকে পর্যটক সরিয়ে নেয়ার করেছে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ধাক্কা খাওয়ার পরই সুপার সাইক্লোন ফণী পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০৯ সালে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আয়লার চেয়েও শক্তিশালী এই সুপার সাইক্লোনের কারণে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী ৮ জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুরীতেও হোটেল খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বুধবার রাজ্যের দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর তাজপুর ও বকখালিতেও একই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশের আয়তনের চেয়েও বড়; প্রায় ২ লাখ বর্গকিলোমিটার। একই জায়গায় গত ৫ দিন ধরে অবস্থান করে প্রবল ধ্বংসাত্মক শক্তি সঞ্চয় করে সুপার সাইক্লোনে রূপ নিচ্ছে ফণী।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, প্রবল শক্তি সঞ্চয়কারী এই ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আরও পড়ুন : স্ত্রী অদল-বদল করে যৌন সম্পর্ক, গ্রেফতার ৪
আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী বর্তমানে কলকাতা থেকে ১০০০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। পুরী থেকে দূরত্ব ৬৫০ কিলোমিটার। দিঘা থেকে রয়েছে ৮৪০ কিলোমিটার দূরত্বে।
শুক্রবার ভারতের ওড়িশা উপকূলে ঘণ্টায় প্রায় ২০৫ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ‘ফণী’র। শক্তি সঞ্চয় করে ধীর গতিতে বঙ্গোপসাগরে ঘোরপাক খাওয়া এই ঝড়ের তাণ্ডবে একেবারে ধ্বংসাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে ভারতের তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ।
ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, শুক্রবার ওড়িশা উপকূলে ঘণ্টায় প্রায় ২০৫ কিলোমিটার গতিতে ফণী আঘাত হানতে পারে। সেখান থেকে গতিপথ ঘুরিয়ে ফণী অগ্রসর হতে পারে পশ্চিমবঙ্গে।
আরও পড়ুন : শ্রমিকের স্বীকৃতি চায় যৌনপল্লির নারীরা
বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের এই রাজ্যে ফণীর গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১৫ কিলোমিটারের কাছাকাছি হতে পারে। তবে গতি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। ৪ মে গতিবেগ হবে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার।
আবহবিদরা বলছেন, স্থলভাগে ফেনির গতিবেগ থাকবে ৫০ কিলোমিটার। ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকবে। বৃহস্পতিবার মেঘাচ্ছন্ন থাকবে আকাশ, বৃষ্টিও হতে পারে।
এসআইএস/পিআর