বড় ধরনের গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার শ্রীলঙ্কা সরকারের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৭ এএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৯
শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় বড় ধরনের গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে দেশটির সরকার। গত রোববার ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় তিনটি গির্জা, তিনটি হোটেল এবং আরও দু'টি স্থানে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫৯ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে আরও পাঁচ শতাধিক মানুষ।
চলতি মাসের শুরুতেই ভারতের একটি গোয়েন্দা সংস্থা শ্রীলঙ্কাকে আসন্ন হামলা সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। কিন্তু প্রশাসনের সব জায়গায় এ বিষয়টি সঠিকভাবে জানানো হয়নি বলে দেশটির পার্লামেন্টে বলা হয়েছে।
সঠিকভাবে তথ্য না জানানোয় এবং আসন্ন হামলা রুখতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধানকে সরিয়ে দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।
রোববারের ওই ভয়াবহ হামলায় জড়িত নয়জনের মধ্যে আটজনই শ্রীলংকার নাগরিক। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট। এ বিষয়ে তদন্ত করছে সরকার।
এদিকে, বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুয়ান উইজেওয়ারডেন বলেন, আমাদের ধারণা আত্মঘাতী হামলাকারীদের একজন ব্রিটেনে লেখাপড়া করেছেন। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন। এরপরেই শ্রীলঙ্কায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
আত্মঘাতী হামলাকারীদের বেশিরভাগেরই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল, কেউ কেউ বিদেশে বসবাস করছিল বা সেখানে পড়াশোনা করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুয়ান উইজেওয়ারডেন।
আত্মঘাতী হামলাকারীদের ওই দলটির বেশিরভাগই শিক্ষিত এবং তারা মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের। তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল এবং তাদের পারিবারিক অবস্থাও ভালো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটা একটি চিন্তার বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন রুয়ান উইজেওয়ারডেন।
তিনি বলেন, আমার ধারণা হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করেছে। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন, ডিগ্রিও অর্জন করেছেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের এই হামলার দায়িত্ব নিতেই হবে কারণ যে সতর্কবার্তা পাওয়া গিয়েছিল তা সঠিকভাবে যথাযথ ব্যক্তিদের জানালে এ ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হতো বা কমপক্ষে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যেত।
শ্রীলংকার সংসদের নেতা লক্ষ্মণ কিরিয়েলা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই সম্ভাব্য হামলার খবর ঝুলিয়ে রেখেছিল। গোয়েন্দা সংস্থার কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইচ্ছা করেই এসব তথ্য গোপন করেছেন। তথ্য থাকার পরেও কর্মকর্তারা সঠিকভাবে এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ওই নেতা বলেন, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে তথ্য এসেছে ৪ এপ্রিল কিন্তু রয়টার্স বলছে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে সে খবর জানানো হয়নি।
টিটিএন/জেআইএম