ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি : আটক ৬


প্রকাশিত: ১১:০৬ এএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে নীলফামারীতে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। জেলা শহরের অদূরে সুঁটিপাড়ায় নির্মাণাধীন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ঠিকাদারের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ওই টাকা আনতে গিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র‌্যাব-১৩ নীলফামারীর সিপিসি-২ ক্যাম্পের সদস্যরা ছয় চাঁদাবাজকে হাতেনাতে আটক করেছে।

বুধবার সকালে নীলফামারী থানায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ওই ছয় চাঁদাবাজকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে। তারা হলেন, জেলা শহরের শাহীপাড়া মহল্লার আতিকুর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৫), একই মহল্লার সফিকুল ইসলামের ছেলে আমজাদ হোসেন (২৩),আবু হানিফের ছেলে বাপ্পী (২০), জুম্মপাড়া মহল্লার হরি কিশোর দেব অধিকারীর ছেলে রঞ্জন কুমার দেব অধিকারী (২২), উকিলের মোড় মহল্লার আমজাদ আলীর ছেলে ইমরান আলী (২৫) ও পশ্চিম বাবুপাড়া মহল্লার আলম হোসেনের ছেলে রেজা হোসেন (২২)।

এদিকে এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজল কুমার ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক নোহেল রানা এক বিবৃতিতে বলেছেন, আটকরা কেউ নীলফামারী জেলা-উপজেলা-পৌরসভা-ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের কোনো কমিটির সদস্য বা সমর্থক নন। সেই সঙ্গে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে জেলার ছয় উপজেলা ও চারটি পৌরসভা এলাকায় কেউ যদি কোনো সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত ব্যাংক বীমা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি করতে যান তাহলে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে আটক করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দিতে বলা হয়েছে।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বলেন, ছাত্রলীগের নাম ধারণ করে একটি চক্র চাঁদাবাজী করছে। যা সকলকে প্রতিহত করতে হবে। নির্মাণাধীন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ঠিকাদার ফেনী জেলার মোখছুদ উল্লাহ বাদী হয়ে নীলফামারী থানায় ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

 ঠিকাদার মোখছুদ উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ওই ছয় যুবক নিজেদের জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী পরিচয় দিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে তিন লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে আসছিলেন। তাদের দুই দফায় ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের দাবিকৃত তিনলাখ টাকার চাঁদা প্রদানের জন্য প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ঘটনার দিন মঙ্গলবার দুপুরে তারা নির্মাণাধীন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন কেন্দ্রে ভেতরে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং চাঁদার জন্য চাপ প্রয়োগ করছিলেন। এসময় তাদের সন্ধ্যার পর আসতে বলা হয়। বিষয়টি নীলফামারী র‌্যাব ক্যাম্পে অবগত করা হয়। সন্ধ্যায় ওই ছয় যুবক চাঁদা নিতে এলে র‌্যাবের হাতে আটক হয়। ঠিকাদার আরো জানান, আটকের পর ওই যুবকরা র‌্যাবের কাছেও নিজেদের ছাত্রলীগ পরিচয় দেন।

নীলফামারী র‌্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি আকরামুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন সুঁটিপাড়ায় নির্মণাধীন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন কেন্দ্রের ঠিকাদার। অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযান চালালে চাঁদাবাজির টাকাসহ ছয় চাঁদাবাজকে আটক করা হয়।

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান পাশা জাগো নিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার সকালে নির্মাণাধীন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ঠিকাদার ফেনী জেলার সোনাগাজীর চরলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার  মোখছুদ উল্লাহ বাদী হয়ে ছয় যুবকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা (নম্বর ৩) দায়ের করেন। সেই সাথে র‌্যাবের সহযোগিতায় আটক ছয় চাঁদাবাজকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। বুধবার আটকদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জাহেদুল ইসলাম/এমজেড

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।