এক টাকাতে ভরপেট খাবার!
এক টাকাতে এ যুগে খাবার পাওয়া যায় শুনেছেন কোনোদিন। তাও আবার ভরপেট! এক টাকাতে হাতে বড়জোর একটা চকলেট ধরিয়ে দেবে দোকানিরা। তবে সব দোকানিই এক নয়, এখনো কিছু ভালো মানুষ আছে পৃথিবীতে। তাদের এমনই একজন মহৎ হৃদয় ভেঙ্কটরমন। প্রচার নয়, তার উদ্দেশ্য শুধুই আত্মতৃপ্তি ও পরোপকার।
পেঁয়াজ-মরিচসহ নানা সবজির দাম যখন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে, বাজার করতে নাজেহাল দশা আম-আদমির, তখন মাত্র এক টাকায় পেটভরে খাওয়াচ্ছেন হোটেল মালিক ভেঙ্কটরমন। প্রচুর আর্থিক ক্ষতিও তাকে টলাতে পারেনি। ভেঙ্কটরমনের জানালেন, মানুষের মুখের তৃপ্তির হাসির দাম অমূল্য। তার জন্য আর্থিক ক্ষতি বহন করতে কোনো অসুবিধে নেই।
দেখতে দেখতে কেটে গেছে ৭ বছর। ২০০৭ সালের একটি ঘটনা। ভারতের তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ভেঙ্কটরমনের জীবনের মোড় ঘুরে যায়। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালের ক্যান্টিন চালাচ্ছেন ভেঙ্কটরমন। নাম এএমভি হোমলি মেস। হাসপাতালের রোগী ও তাদের আত্মীয়দের খাওয়া-দাওয়া করার একমাত্র ক্যান্টিন।
ভেঙ্কটরমন জানাচ্ছেন, ২০০৭ সালে এক বৃদ্ধা তার রেস্তোরাঁয় আসেন ইডলি কিনতে। কিন্তু ইডলি শেষ হয়ে যায়। ভেঙ্কটরমন বৃদ্ধাকে জানান, আপনি ১০ টাকায় তিনটি ডোসা নিতে পারেন। বৃদ্ধার কাছে টাকা ছিল না ডোসা খাওয়ার। ফিরে যাচ্ছিলেন। তখন ভেঙ্কটরমন তাকে ছয়টি ডোসাই দেন ১০ টাকার বিনিময়ে। বৃদ্ধা তাকে আশীর্বাদ করেন।
ভেঙ্কটরমন ঠিক করলেন, হাসপাতালে আসা সব গরিব রোগীদের তিনি পেট ভরে খাওয়াবেন এক টাকার বিনিময়ে। প্রতিদিন প্রায় ৭০ থেকে ১০০ জনকে এক টাকায় খাবার খাওয়ান তিনি।
ভেঙ্কটরমনের কথায়, `প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েও তিনি এই স্কিম চালিয়ে যাবেন। কারণ সরকারি হাসপাতালে বহু গরিব রোগী ভর্তি হন, যাদের আত্মীয়দের বেশি দাম দিয়ে খাওয়ার পয়সা নেই। তবে বাইরের লোকদের জন্য মিল প্রতি ৫০ টাকা।`
খাবার কিনে হাসপাতালে গিয়ে খাওয়া যাবে বা রেস্তোরাঁয় বসেই খেতে হবে। বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। ভেঙ্কটরমনের কথায়, `আর্থিক ক্ষতি হয় ঠিকই। কিন্তু যতোদিন পারবো চালিয়ে যাবো।
বিএ