তিস্তার পানির তোড়ে ভাঙছে জনপদ


প্রকাশিত: ০২:৩৫ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তার বাম তীরের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রবল পানির স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তা ব্রিজসহ ঘর-বাড়ি।

এতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়ের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ইতোমধ্যে রোপা আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর।তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে আরও সড়ক ও ব্রিজ।
    
মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি।ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বিকেল থেকে তিস্তার পানি বাড়ছে।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার গড্ডিমারী তালেব মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাতীবান্ধার বড়খাতা সংযোগ সড়কের নির্মাণাধীন বাঁশের পাইলিং ফের ভেঙে গেছে।সেখান দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকে অদূরের মিলন বাজার গড্ডিমারী যাতায়াতের অপর একটি সড়কের ব্রিজ ভেঙে যায়।

গড্ডিমারী গ্রামের তালেব মোড় এলাকার তিস্তার প্রবল স্রোতে মোজাম্মেল হক, কাশেম আলী, আকবর আলীর ঘর-বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে।ইতোমধ্যে মোজাম্মেল হকের ৭ বিঘা সুপারীর বাগান ও কৃষি জমি তিস্তায় বিলিন হয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, রোববার ভোরে হাতীবান্ধা-বড়খাতা সড়কের ভাঙা অংশ দিয়ে ধেয়ে আসা পানিতে মিলন বাজার সড়কের ব্রিজটিও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়।এতে করে গড্ডিমারী ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষজনকে অতিরিক্ত পথ ঘুরে হাতীবান্ধা উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হচ্ছে।গত রমজান মাসে তিস্তার বাম তীর রক্ষা বাধের কিছু অংশ ভেঙে যায়।সেই অংশটি বন্ধ না করায় তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে, ঠিক তখনই তাদের যাতায়াতের রাস্তা ও ব্রিজগুলো ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যহত হচ্ছে।

এতে করে হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিংঙ্গীমারী, সিন্দুর্ণা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের বানভাসী মানুষজন সীমাহীন দুভোর্গ পোহাচ্ছে। হাতীবান্ধার সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি হুমকির মুখে পড়েছে।
   
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা (পিআইও) ফেরদৌস আলম জাগো নিজকে বলেন, আমরা ১২ হাজার পরিবারের তালিকা করে ত্রানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।আমরা পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করছি।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে আসেন লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান।তিনি তিস্তার ভাঙন কবলিত গড্ডিমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকৌশলী অজয় কুমার সরকার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ৪টি ব্রিজ ও তিনটি রাস্তা মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি।তবে সামায়িক ভাবে প্রটেকশন তৈরিতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

রবিউল হাসান/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।