যেভাবে গ্রেফতার হলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৯

মার্কিন গোপন নথিপত্র ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান আসাঞ্জকে গ্রেফতার করেছে ব্রিটেনের পুলিশ। বৃহস্পতিবার ব্রিটেনে অবস্থিত ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সাত কর্মকর্তা তাকে টেনে-হেঁচড়ে দূতাবাস থেকে বের করে আনেন।

বহুদিন ধরেই লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ। গ্রেফতারের সময় সাদা চুল-দাঁড়ির অ্যাসাঞ্জকে অনেকটা বিধ্বস্ত লাগছিল। এ সময় তার হাতে একটি বই ছিল এবং তিনি চিৎকার করছিলেন।

সাত বছর ধরে তিনি ব্রিটেনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজৈনিতক আশ্রয়ে ছিলেন। যৌন সহিংসতার অভিযোগে করা একটি মামলায় সুইডেনে প্রত্যর্পণ এড়াতে সাত বছর আগে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১০ সালে সুইডেনে দুই নারীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। তবে বরাবরই আসাঞ্জ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরও আত্মসমর্পণ না করায় অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের পুলিশ। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাসাঞ্জকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তাকে যত দ্রুত সম্ভব ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হবে।

ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো জানিয়েছেন, বার বার আন্তর্জাতিক নীতিমালা ভঙ্গ করায় তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে উইকিলিকসের পক্ষ থেকে এক টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, অবৈধভাবে অ্যাসাঞ্জের ওপর থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইকুয়েডর।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমি এটা নিশ্চিত করছি যে, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। ব্রিটেনে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তিনি এজন্য ইকুয়েডরের সহযোগিতা এবং ব্রিটেনের মেট্রোপুলিশকে তাদের পেশাদারিত্বের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’

৪৭ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ দূতাবাস ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। তার অভিযোগ তিনি দূতাবাস ছাড়লেই তাকে উইকিলিকসের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলার আগে কেন্দ্রীয় লন্ডনের একটি পুলিশ স্টেশনে রাখা হবে অ্যাসাঞ্জকে।

বেশ কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে ২০০৬ সালে উইকিলিকস নামের ওয়েবসাইটটি চালু করেন অ্যাসাঞ্জ। এই সাইটে তিনি একের পর এক গোপন মার্কিন নথিপত্র প্রকাশ করতে থাকেন। এ কারণে বিব্রত যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

গোয়েন্দা পুলিশ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানিয়েছে, ইকুয়েডরের রাষ্ট্রদূতের আহ্বানে দূতাবাসের ভেতরে ঢুকে তারা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করেছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাসাঞ্জকে ধরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ঋণ মওকুফের আবেদন জানিয়েছেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো।

টিটিএন/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।