মাছরাঙার ঠোঁটের কারণে বদলে গেল ট্রেনের নকশা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:১২ পিএম, ০৫ এপ্রিল ২০১৯

৩০ বছর আগে জাপানের বিখ্যাত বুলেট ট্রেনের একটা ত্রুটি ছিল। টানেলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বিকট এক ধরনের শব্দ করতো এটি। বন্যপ্রাণি, যাত্রী এবং আশপাশে থাকা মানুষের জন্য বিরক্তিকর ছিল এই শব্দ।

কিন্তু কেন হচ্ছিল সেই শব্দ? এটা নিয়ে নড়েচড়ে বসল গবেষকরা। গবেষণায় তারা দেখলেন, টানেলে ঢোকার সময় ট্রেনের বাতাসের সামনে একটি স্তর থাকত। ট্রেনটি যাওয়ার সময় সঙ্কুচিত বায়ু শব্দ তৈরি করত এবং তা টানেল থেকে বের হওয়ার সময় বুম-বন্দুকের গুলির মতো শব্দ করত। বাতাসের কারণে ট্রেনের গতি কমে আসত, অনেকটা পানির মধ্য দিয়ে হাঁটার মতো।

কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে রীতিমতো আবার গবেষণা শুরু করে দিলেন তারা। এ গবেষণায় সমাধান এনে দিল মাছরাঙা পাখি।

ট্রেনের নকশাকাররা গবেষণা করে দেখলেন, মাছরাঙা পাখির লম্বা, সরু, তীক্ষ্ণ ঠোঁট পানিতে প্রবেশ করার জন্য আদর্শ। লম্বা এবং সরু ঠোঁটটি ধীরে ধীরে গোড়া থেকে ব্যাসে বড় হয়ে পাখির মাথা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পাখি যখন পানিতে প্রবেশ করতে থাকে তখন এর ফলে সংঘর্ষের প্রভাব কমে যায়। ঠোঁটের পাশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সহজেই পানিতে প্রবেশ করতে পারে পাখিটি। এক্ষেত্রে ঠোঁটের সামনের অংশ দিয়ে পানির স্তরকে ধাক্কা দিতে হয় না।

ঠিক এই কাজটি করতে হচ্ছিল বুলেট ট্রেনটিকে। ট্রেনের নকশাকারীরা পাখির ঠোঁটের গঠন নিয়ে গবেষণা করেন। এতে দেখলেন, পাখির ঠোঁট দুটি ত্রিভুজের সমন্বয়ে গঠিত। যাতে কিছুটা বৃত্তকার প্রান্ত থাকায় তা একটা চ্যাপটা হীরার আকার নেয়। এবং এভাবেই মাছরাঙার ঠোঁট তাদেরকে ট্রেনের নাকের নকশা তৈরিতে সাহায্য করে।

যখন এটি পরীক্ষা করা হলো, তখন দেখা গেল নতুন এই বুলেট ট্রেনটি আরও দ্রুতগতির, কম শব্দ তৈরিকারী, এবং শক্তিশালী। একই সঙ্গে আগের ট্রেনের চেয়ে ৩০ ভাগ কম বায়ু প্রতিরোধী।

সূত্র: বিবিসি

এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।