নাজিব রাজাকের বিচার শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২৮ এএম, ০৪ এপ্রিল ২০১৯

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিচার শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মোট অভিযোগ ৪২টি। বুধবার (৩ এপ্রিল) শুনানির প্রথম দিনেই তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

২০০৯ সালে মালেয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নাজিব রাজাক। এর কিছুদিন পর তিনি ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি) নামে একটি রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল গঠন করেন। এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও আবাসন খাতে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ করা হয়।

নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তিনি ওই রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে ৬৮১ মিলিয়ন ডলার নিজের পকেটে ঢুকিয়েছেন। ব্যক্তিগত বিলাসিতার কারণে রাষ্ট্রের এই টাকা খরচ করেছেন তিনি। তহবিল থেকে পাচার হওয়া এসব টাকা দিয়ে সুপার-ইয়ট বা প্রমোদতরী কেনা হয়েছে। এর দাম ছিল ২৫ কোটি ডলার। এছাড়া হলিউডে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণেও এ অর্থ খরচ করা হয়েছে।

Najib

ওয়ানএমডিবির অর্থ কেলেঙ্কারিতে ভালোভাবেই জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান শ্যাকস। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার বর্তমান সরকার মামলা করেছে।

শুনানির প্রথম দিনে গতকাল সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাজিব রাজাক। গোল্ডম্যান শ্যাকসও বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে করা প্রতারণার মামলাটি তারা লড়বে। তবে গোল্ডম্যান শ্যাকসের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অপারেশসনসের প্রধান টিম লেইসনার ঘুষ ও অর্থ পাচারের ভূমিকা রাখার কথা স্বীকার করেছেন।

ওয়ানএমডিবি তহবিলের অর্থ পাচারের বিষয়টি প্রথম নজরে আসে ২০১৫ সালে। ওই বছরে যখন বিভিন্ন ব্যাংক ও বিনিয়োগকারীদের অর্থাৎ বন্ড ক্রেতাদের পাওনা পরিশোধে বিলম্ব হয়, তখনই এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

এরপর ওয়ানএমডিবি থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, ওই তহবিল থেকে ৪৫০ কোটি ডলার বেশ কয়েকজনের পকেটে গেছে। ওয়ানএমডিবি তহবিল থেকে অর্থ পাচার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরসহ ছয়টি দেশে তদন্ত চলছে।

Najib

মার্কিন কৌঁসুলিরা তখন জানান, মালয়েশিয়ার একজন কর্মকর্তা ওয়ানএমডিবি থেকে ৬৮১ মিলিয়ন ডলার নিয়েছেন বলে তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। পরে প্রকাশ হয়, ওই কর্মকর্তা আসলে নাজিব রাজাক। তবে তিনি তখনও প্রধানমন্ত্রী থাকায় দেশের ভেতর এক তদন্তে তাকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নাজিব রাজাকের পরাজয়ের পেছনে ওই দুর্নীতির অভিযোগ প্রধান ভূমিকা রাখে।

মালয়েশিয়ার নতুন সরকার এসেই ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তে নামে। পুলিশ জানায়, নাজিব রাজাকের বাড়ি থেকে তারা প্রচুর বিলাসী দ্রব্য এবং নগদ টাকা উদ্ধার করেছে। রাজাককে গ্রেফতার করা হলেও তিনি জামিনে মুক্তি পান।

তদন্তের অন্যতম প্রধান টার্গেট মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী রো তায়েক ঝো। দেশে তিনি ঝো লো নামে পরিচিতি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তার কয়েকজন সহযোগী ওই তহবিল থেকে প্রচুর টাকা সরিয়েছেন। ঝো লো এখন পলাতক।

সূত্র : বিবিসি

এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।