কথা ছিল দেশে ফেরার, কফিনে ফিরলেন ক্রাইস্টচার্চে নিহত ছাত্রী
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনায় নিহত এক ভারতীয় শিক্ষার্থীর মরদেহ দেশে ফিরেছে। কেরালা রাজ্যের ওই শিক্ষার্থীর মৃতদেহ সোমবার কোচিতে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২৫ বছর বয়সী আনসি আলিবাভা ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চে নারকীয় হত্যাকাণ্ডে নিহত পাঁচ ভারতীয়র মধ্যে একজন। সোমবার সকালেই কোচি বিমানবন্দরে তার মরদেহ আনা হয়। কোডুঙ্গালুরে নিজের শহরেই ওই ছাত্রীকে দাফন করা হবে জানিয়েছে তার পরিবার।
আনসি আলিবাভা তার স্বামী আবদুল নাজারের সঙ্গেই ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন।
মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আলিবাভা। পাঁচ বছর আগে সৌদি আরবে কাজ করার সময় তার বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি।
ক্রাইস্টচার্চের লিঙ্কন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায়িক কৃষি বিষয়ে গবেষণা করার জন্য কয়েক হাজার ডলার ঋণ নিয়েছিলেন। আনসি আলিবাভার এক আত্মীয় এএফপিকে বলেন, শিগগিরই তার পড়াশুনা শেষ হওয়ার কথা ছিল। এপ্রিলেই পড়াশোনা শেষে ছয় মাসের প্রশিক্ষণমূলক কোর্স করে ডিসেম্বরে তার দেশের ফেরার কথা ছিল।
আলিবাভা তার স্বামী নাজারের সঙ্গে একটি সুপারমার্কেটে পার্ট টাইম হিসেবে কাজ করতেন। দু'বছর আগেই বিয়ে করেছিলেন তারা। ১৫ মার্চ তারা আল নূর মসজিদে গিয়েছিলেন। সেখানে নারী এবং পুরুষদের জন্য নামাজের আলাদা জায়গা ছিল।
গুলি চলার সময় আবদুল নাজার একটি জরুরি প্রস্থানের ভেতর দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও গুলিতে নিহত হন তার স্ত্রী। যখন তিনি স্ত্রীকে খুঁজতে ফিরে আসেন তখন তিনি দেখেন যে, নিথর দেহে মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন তার স্ত্রী। গণহত্যার ২৪ ঘণ্টা পর তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার স্ত্রীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল।
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু'টি মসজিদে হামলার ঘটনায় ৫০ জন নিহত হয়। আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। এছাড়া এখনও কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ২৮ বছর বয়সী উগ্র-ডানপন্থি ব্রেন্টন ট্যারেন্ট নামের এক অস্ট্রেলীয় নাগরিক ওই হামলা চালায়। এতে ভারত, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, পাকিস্তানসহ বেশ কিছু দেশের নাগরিকরা নিহত হয়েছেন।
টিটিএন/পিআর