ভারতে ঘরে ঢুকে মুসলিম পরিবারকে বেধড়ক মারপিট (ভিডিও)
হোলির দিন বাড়ির বাইরে ক্রিকেট খেলায় এক মুসলিম পরিবারকে লাঠি, হকিস্টিক, রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে উগ্রপন্থী একদল হিন্দু যুবক। তাড়া করে ঘরে ঢুকে, মাটিতে ফেলে, রীতিমতো লাঠি এবং রড দিয়ে রক্তাক্ত করা হয় ওই মসুলিম পরিবারকে। এমনকি তাদের ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার হুমকিও দেয় এই সন্ত্রাসীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ভারতের গুরুগ্রামের ভূপ সিংহ নগরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তদের মধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় এক প্রতিবেশি মারধরের ওই দৃশ্য গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। পরে ভিডিও ফুটেজটি শেয়ার হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ভিডিও দেখে সন্দেহভাজন উগ্রপন্থী এ সন্ত্রাসীদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে গুরুগ্রাম পুলিশ।
আক্রান্ত ওই পরিবারের অভিযোগ, তারা মুসলিম হওয়াতেই আক্রান্ত হতে হয়েছে। মারধরের সময় তাদের পাকিস্তানে চলে যেতে বলে হুমকিও দেয় দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন : জেসিন্ডাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার দাবি
পুলিশ বলছে, হোলির দিন ভূপ সিংহ নগরে বাড়ির কাছে ক্রিকেট খেলছিলেন কয়েকজন মুসলিম যুবক। ওই সময় মদ্যপ অবস্থায় ৩০ থেকে ৪০ জন দুর্বৃত্ত আসে সেখানে। হোলির দিন কেন তারা ক্রিকেট খেলছেন, এই প্রশ্ন তুলে তাদের সঙ্গে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
এই নিয়ে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি চলে দু’পক্ষের মধ্যে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে গেলে তাদের মারধর করতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। এমনি পাকিস্তানে চলে যাওয়ার হুমকিও দেয়া হয় তাদের। পুলিশের কাছে দেয়া আক্রান্ত পরিবারের বয়ান অনুযায়ী, পরে ভয়ে, আতঙ্কে প্রত্যেকেই বাড়ির দিকে ছুটতে থাকেন। লাঠি, রড নিয়ে পিছু ধাওয়া করে দুর্বৃত্তরা।
এর পর তাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে তারা। প্রত্যেকের হাতেই লাঠি, রড ছিল। মাটিতে ফেলে সেগুলো দিয়েই বেধড়ক মারধর শুরু করে দেয়। পরিবারের বাকি সদস্যরা বাধা দিতে এলে তাদেরও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার সময় অন্য একটি ঘর থেকে পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করেন এক ব্যক্তি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন সাধারণ মানুষ। ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী হাতজোড় করে দুর্বৃত্তদের চলে যেতে অনুরোধ করছেন। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র পাত্তা দিচ্ছে না হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কেউই।
গুরুগ্রামের এসিপি শামসের সিংহ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে। আক্রান্ত পরিবারটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। তারা বাড়ির বাইরে ক্রিকেট খেলার সময়ই এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’ আনন্দবাজার।
এসআইএস/আরআইপি