পৌর মেয়রসহ আ.লীগের ২১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা


প্রকাশিত: ১১:৩৬ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

বরিশালের গৌরনদী উপজেলা যুবলীগ নেতা সলিল গুহ পিন্টুকে (৩৩) কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় পৌর মেয়রসহ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ২১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার বেলা ১১টার দিকে আহত গুহ পিন্টুর মা তাপসী রানী গুহ বাদী হয়ে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।  

দুপুরে আদালতের বিচারক তরুন বছার মামলাটি গৌরনদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এ মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন, গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মো. হারিছুর রহমান (৪৬), উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক পৌর কাউন্সিলর জামাল হোসেন বাচ্চু (৪৭), যুবলীগ নেতা আল-আমিন হাওলাদার ওরফে টেরা আলামিন (৪৩), দেলোয়ার হাওলাদার (৩২), ছাত্রলীগ কর্মী জিয়া হাওলাদার (২৫), শিমুল আকন, (৩০), জুলহাস সরদার (৩০), রাসেল হাওলাদার (৩১), রিপন বেপারী (২৮), দুলাল গোমস্তা (২৮), রায়হান বেপারী (৩২), মামুন বেপারী (৩৪), রাসেদ খান (২৫), কামাল খান, সুমন সরদার (৩২), আল-আমিন ওরফে কালা আলামিন (৩৪) ও সুমন চক্রবর্তী (৩০)।

বাদী তাপসী রানী গুহ আরজির বরাত দিয়ে জানান, তার বড় ছেলে মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা হারিছের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। হারিছ বাহিনী একছত্র আধিপত্য বিস্তারের জন্য হারিছের হুকুমে আসামিরা তার ছোট ছেলে সলিল গুহ পিন্টুকে হত্যার উদ্দেশ্যে গত ১৬ আগস্ট ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিন্টুর মাথা, পা ও দুই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।  

ওই সময়ে মাসুদ সরদার উদ্ধারে এগিয়ে আসলে আসামিরা তাকেও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন পিন্টুকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। এরপর সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৯ আগস্টে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে পিন্টু ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরজিতে আরোও উল্লেখ করা হয়, এক নম্বর আসামি হারিছ বাহিনীর প্রধান হারিছের বিরুদ্ধে জাতির পিতা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং সরকারি অফিস, গ্রাম আদালত ভাঙচুর মামলার বাদী সৈকত গুহ পিকলু। দুই নম্বর আসামি ট্যারা আলামিনের নামে বোমা, সংখ্যালঘুদের জমি দখল ও ডাকাতি, সন্ত্রাসীসহ ১৯/২০টি মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ গৌরনদীর মাহিলাড়া এলাকায় ঠিকাদারি কাজের বিরোধ নিয়ে উপজেলার পৌর চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সধারণ সম্পাদক হারিচুর রহমান হারিচের ভাই গোলাম সরোয়ার ফারুককে মারধর করে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈকত গুহ পিকলু ও তার অনুসারীরা।

আর এরই জের ধরে পৌর মেয়র হারিচুর রহমান হারিচের দুই শতাধিক অনুসারী মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ, মর্ডান ক্লাবসহ ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর এবং একটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় । এ সময় দুই পুলিশ সদস্যসহ ১২ আহত হন।

পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। এরপর গত ১৬ আগস্ট সলিল গুহ পিন্টুকে (৩৩) কুপিয়ে আহত করা হয়।

সাইফ আমীন/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।