হামলাকারীকে রুখে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন ৭১ বছরের এই বৃদ্ধ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৭ এএম, ১৭ মার্চ ২০১৯
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে শুক্রবারের হামলায় ৫০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে আল নুর মসজিদেই হত্যা করা হয়েছে ৪১ জনকে। মসজিদটিতে বর্বর এ হামলা চালায় ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ব্রেনটন ট্যারেন্ট।
হতাহতদের মধ্যে সর্বপ্রথম যাকে শনাক্ত করা হয়েছে তিনি দাউদ নবী। তার জন্ম আফগানিস্তানে। ১৯৮০ সালে সোভিয়েত আগ্রাসন থেকে পালাতে পরিবার নিয়ে নিউজিল্যান্ডে চলে আসেন। তিনি পেশায় একজন প্রকৌশলী ছিলেন। নিজের অবসরের পর নিউজিল্যান্ডে একজন কমিউনিটি নেতা হয়ে ওঠেন। স্থানীয় আফগান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং অভিবাসীদের পরিচিত একজন পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
হামলাকারী যখন বন্দুক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন দাউদ নবী মসজিদের অন্যদের রক্ষা করতে নিজে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার ছেলে ওমর এনবিসি নিউজকে বলেছেন, ‘ফিলিস্তিন, ইরাক, সিরিয়া যেখান থেকেই কেউ আসুক না কেন তিনিই (দাউদ নবী) প্রথম হাত বাড়িয়ে দিতেন।’
এ ঘটনার পর পুলিশ বলেছে, তারা নিহতদের স্বজনদের কাছে একটি তালিকা হস্তান্তর করেছে। তবে সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ জানিয়েছেন, মৃতদেহ এখনো হস্তান্তর করা হয়নি। এর কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, কর্মকর্তারা প্রত্যেক আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়ার পরই কেবল মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।
তবে এখনো পর্যন্ত একটা বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেক আসা এবং তাদের অনেকেই শরণার্থী ছিলেন। তারা ভেবেছিলেন নিউজিল্যান্ডে তাদের একটি নিরাপদ আশ্রয় মিলেছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১৬ মিনিটের লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, যখন হামলাকারী আল নুর মসজিদে প্রবেশ করছেন তখন তাকে দেখে ওই ব্যক্তি বলছেন, ‘হ্যালো ব্রাদার’। আর তখনই হামলাকারী তাকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি ছোড়েন। এতে লুটিয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। এরপর বন্দুকধারী এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনবরত গুলি ছুড়তে থাকেন।
হামলাকারী মসজিদের ভেতরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বেশ কয়েকটি বন্দুক নিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে সামনে আগাচ্ছিলেন। যারা তার হামলা থেকে বাঁচতে মাটিতে শুয়ে পড়েন তাদের খুঁজে খুঁজে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করছিলেন।
মসজিদের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে গিয়ে প্রথম যে কক্ষটি পান সেখানে মুসল্লিদের ওপর নির্বিচারে টানা গুলি করা শুরু করেন। গুলির শব্দ শুনে মুসল্লিরা পালানোর চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়েন। পরে এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে ঘুরে ঘুরে গুলি করতে থাকেন। জীবিত মানুষ দেখলে গুলি করে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এসআর/এমএস