খলনায়ক ব্রেনটনকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন এই মহানায়ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৪২ এএম, ১৭ মার্চ ২০১৯
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৪৯ জনকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে আল নুর মসজিদেই হত্যা করা হয়েছে ৪১ জনকে। মসজিদটিতে বর্বর এ হামলা চালায় ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ব্রেনটন ট্যারেন্ট। হামলাকারী ভিডিও গেমের ন্যায় ঠাস ঠাস করে গুলিতে ছুড়তে ছুড়তে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। বৃষ্টির মতো গুলিতে লুটিয়ে পড়েন মুসল্লিরা। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকে হামলাকারী।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারী যখন বন্দুক নিয়ে হামলার উদ্দেশে মসজিদে প্রবেশ করে তখন গুলিতে নিহত প্রথম ব্যক্তি তাকে ‘হ্যালো ব্রাদার’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। এর জবাবে তাকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছোড়ে হামলাকারী।
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে যখন এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছিলেন ব্রেনটন ট্যারান্ট, তখন প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে দেখেছেন এক ব্যক্তি হামলাকারীকে জাপটে ধরে আটকানোর চেষ্টা করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ‘তিনি হামলাকারীকে না আটকালে নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়ত।’
শনিবার ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ থেকে আসা নইম রশিদ। রাতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। গতকালই নইমের ছেলে তালহা রশিদ প্রাণ হারিয়েছিলেন। বাকি অনেকের জীবন বাঁচিয়ে চলে গেলেন নইম।
হামলাকারী ব্রেনটন ট্যারেন্ট
প্রত্যক্ষদর্শী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফয়জল সৈয়দ জানান, কীভাবে মসজিদে গুলিবৃষ্টির মধ্যেই ‘জনৈক ব্যক্তি’ ছুটে এসে হামলাকারীকে জাপটে ধরেন। বন্দুক না নামানো পর্যন্ত চেপে ধরে রাখেন। ফয়জল বলেন, ‘আমি বেঁচে গেছি শুধু ওই মানুষটির জন্যই। ব্রেনটনের গুলিতে মারাত্মক জখম হয়েছিলেন নইম। কাল গভীর রাতেই তার মৃত্যু হয়।’
অ্যাবোটাবাদে থাকাকালীন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন নইম। পরে শিক্ষকতার চাকরি নিয়ে নিউজিল্যান্ডে চলে যান। নইম এবং তালহার মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমকে জানান নইমের ভাই খুরশিদ আলম।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়জল জানিয়েছেন, আরও ন’জন পাকিস্তানির খোঁজ মিলছে না।
আল নুর মসজিদের পরে কাছের লিনউড মসজিদেও হামলা চালায় ব্রেন্টন। সেখানেও এক ব্যক্তি প্রাণপণে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দ মাজহারউদ্দিন। এখানে হামলাকারীর হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নিতে পেরেছিলেন একজন। কিন্তু বন্দুক চালাতে জানতেন না তিনি। সেই ফাঁকে হামলাকারী ছুটে গাড়িতে উঠে পড়ে।
এসআর/এমএস