ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে তুরস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৫৬ পিএম, ১৬ মার্চ ২০১৯
নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলাকারী অভিযুক্ত উগ্রপন্থী শেতাঙ্গ ব্রেন্টন ট্যারেন্টের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে তুরস্ক। হামলার আগে বেশ কয়েকবার তুরস্কে সফরে গিয়েছিলেন এই হামলাকারী; এমন অভিযোগ ওঠার পর আঙ্কারা তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। শুক্রবার জুমআর নামাজের সময় উগ্র ডানপন্থী শেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেন্টন আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালান।
মসজিদের ভেতরে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৪৯ জনকে হত্যা করেন তিনি। এছাড়া আহত হয় আরো ৪৮ জন। অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ২৮ বছর বয়সী এই হামলাকারীকে গ্রেফতারের পর শনিবার নিউজিল্যান্ডের আদালতে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন : এবার লন্ডনে মসজিদে হাতুড়ি নিয়ে মুসলিমের ওপর হামলা
তুরস্কের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, অস্ট্রেলীয় এই হামলাকারী বেশ কয়েকবার তুরস্ক সফর করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে তিনি আমাদের দেশে অবস্থান করেছিলেন। তবে বেন্টন কখন তুরস্কে এসেছিলেন সেব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেননি তুর্কি এই কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুর্কি এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আমাদের ধারণা সন্দেহভাজন ওই হামলাকারী তুরস্ক থেকে ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার কোনো দেশে গিয়েছিলেন। আমরা তার চলাফেরা এবং তুরস্কে অবস্থানকালে কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন সেব্যাপারে তদন্ত করছি।
তুরস্কের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারী ওই বন্দুকধারী তুরস্কের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ইস্তাম্বুলের হাজিয়া সোফিয়া মসজিদের মিনারেও উঠেছেলেন তিনি। অটোম্যান শাসনামলে খ্রিস্টানদের উপাসনালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো হাজিয়া সোফিয়া। পরে এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন : মসজিদে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নেন এই সাহসী তরুণ
২০১৮ সালের নভেম্বরে তুরস্ক থেকে হামলাকারী ব্রেন্টন বুলগেরিয়া সফর করেছিলেন। তার ওই সফর নিয়েও তদন্ত করছে তুরস্ক। বুলগেরিয়ার প্রধান প্রসিকিউটর সোতির স্যাসস্যারোভ বলেছেন, বলকান ইতিহাস সম্পর্কে জানতে বুলগেরিয়ায় প্রায় এক সপ্তাহ অবস্থান করে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেছিলেন বেন্টন। তবে তার এই সফরের উদ্দেশ্য সঠিক ছিল না-কি অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল সেটি তদন্তে উঠে আসবে।
২০১৬ সালে বাসযোগে বলকান রাষ্ট্র সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মন্টিনিগ্রো, বসনিয়া ও হারজেগোভিনা সফর করেন অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত এই হামলাকারী।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে প্রাণঘাতী হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এই হামলা ইসলামের প্রতি ক্রমবর্ধমান শত্রুতার প্রতিফলক; যা অলসভাবে দেখছে বিশ্ব। অনেক সময় বিশ্ব এসব হামলাকে উৎসাহিত করছে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়রানির মাত্রা অতিক্রম করে এখন তা গণহত্যায় রূপ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন : ক্রাইস্টচার্চে নিহত বাংলাদেশি আবদুস সামাদের স্ত্রী বেঁচে আছেন
এরদোয়ান বলেন, এটা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, ঘাতক আমাদের দেশ, দেশের মানুষ ও আমাকেও টার্গেট করেছিল। এটা এখন পশ্চিমা সমাজে ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। পশ্চিমাবিশ্বের ইসলামভীতির সমালোচনা করেন তুরস্কের এই প্রেসিডেন্ট। এ ধরনের হামলা ঠেকাতে পশ্চিমা বিশ্বকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এসআইএস/এমএস