ক্রাইস্টচার্চে হামলায় বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া, নীরব ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৯
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে ভয়াবহ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত এবং আরও ২০ জনের বেশি মানুষ গুরুতর আহত হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ আল নুরে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় এক বন্দুকধারী। ভয়াবহ এই হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিনডা আর্ডার্ন।
নিউ প্লাইমাউথে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জেসিনডা আর্ডার্ন ক্রাইস্টচার্চে হামলার ঘটনাকে নিউজিল্যান্ডের জন্য একটি অন্ধকার দিন উল্লেখ করে এই হামলাকে চরম এবং নজিরবিহীন সহিংসতা বলেছেন।
নিউজিল্যান্ডের ওই হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান এ নিয়ে বিবৃতি দিয়ে সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে তাকে কোন বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি।
হোয়াইট হাউসের অফিসিয়াল টুইটারেও এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। তবে নিউজিল্যান্ডে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্কট ব্রাউন এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন, তিনি এই হামলার ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন।
নিউজিল্যান্ডের বন্ধু এবং প্রতিবেশী দেশগুলো এই ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছে। মালয়েশিয়া জানিয়েছে, এই হামলায় তাদের দুই নাগরিক আহত হয়েছেন। নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বোধ সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের পেছনে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে।
ফিজির প্রধানমন্ত্রী ফ্যাঙ্ক বেইনিমারামা বলেছেন, নিউজিল্যান্ডে আমাদের ভাই-বোনদের প্রতি ফিজির জনগণের সমবেদনা। ওই হামলার ঘটনায় এক বা দু'জন ফিজির নাগরিক থাকতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মোরিসন বলেন, যখন ঘৃণা এবং সহিংসতা সবার শান্তি কেড়ে নিয়েছে, আজ নিউজিল্যান্ডের এমন দুঃসময়ে জনগণের পাশে আছে অস্ট্রেলিয়া। সবার মনোবল দৃঢ় রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি জানিয়েছেন, তিনি এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানান। বিশেষ করে শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় এমন হামলার সমালোচনা করেছেন তিনি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, বর্ণবাদ এবং ইসলামভীতি বেড়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উদাহরণ এই হামলা। ক্রাইস্টচার্চে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে নিউজিল্যান্ডের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
নিজেকে ব্রেনটন ট্যারেন্ট বলে পরিচয় দেয়া ক্রাইস্টচার্চে হামলাকারী ওই হামলার পেছনে নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানিয়ে একটি ম্যানিফেস্টোতে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি ওই হামলা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন।
নিজেকে তিনি ডানপন্থী নীতির পক্ষে এবং অভিবাসী নীতি বিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন। হামলা চালানোর সময় সামাজিক মাধ্যমে লাইভে ছিলেন ওই হামলাকারী। ১৭ মিনিট ধরে ওই হামলার লাইভ ভিডিও প্রচারিত হয়।
২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান-বংশোদ্ভূত ওই হামলাকারী নিজেকে সাধারণ শ্বেতাঙ্গ নাগরিক বলে উল্লেখ করেছেন।ব্রেনটনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া আরও তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
টিটিএন/এমকেএইচ