কেন বোয়িংয়ের বিমান বারবার বিধ্বস্ত হয়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:০৬ পিএম, ১১ মার্চ ২০১৯

কয়েক মাসের ব্যবধানে দুটি বোয়িং-৭৩৭ মডেলের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। রোববার বোয়িংয়ের একটি বিমান ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৭ জন যাত্রীর সবাই মারা যাওয়ার পর এমন প্রশ্ন উঠেছে।

গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় বোয়িং-৭৩৭ মডেলের একটি বিমান উড্ডয়নের তেরো মিনিট পর জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ যাত্রীর সবার মৃত্যু হয়। পাঁচ মাসের মাথায় রোববার ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সেরও একই মডেলের একটি বিমান উড্ডয়নের ছয় মিনিটের মাথায় বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেল আরও ১৫৭ জন।

ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিধ্বস্তের পর এই মডেলের বিমান চলাচল বাতিল করছে চীন, ভারত ও ইথিওপিয়া। চীনের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, অভ্যন্তরীণ বিমান সংস্থাগুলোকে সোমবার থেকে বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮ বিমানের সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চীনের পক্ষ থেকে বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হচ্ছে, দুটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ধরন একই রকম। তাই তারা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিমান বহরে বোয়িং-৭৩৭ মডেলের বিমান সংযোজনে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। চীনে প্রায় ৯০টি বোয়িং-৭৩৭ মডেলের বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ ডিজিসিএ বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিমান পরীক্ষা করতে দেশটির দুটি বিমান সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে। তাছাড়া ইথিওপিয়ার সরকার দেশটির বিমান সংস্থাগুলোকে বোয়িংয়ের বিমান ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে।

ইথিওপিয়ায় দুর্ঘটনার আগে পাইলট বিমানের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন বলে তথ্য দিয়েছে এয়ারলাইন্সটি। ওই পাইলটের আট হাজার ঘণ্টা উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে। গত বছর ৩৭ ম্যাক্স-৮ বোয়িং বিমানটি ইথিওপিয়ার বহরে যুক্ত বিমানটি আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলেও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে জানান তারা।

ইন্দোনেশিয়ায় লায়ন এয়ারের বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর তদন্তকারীরা জানিয়েছিল, বিমানকে সচল রাখতে ৭৩৭ ম্যাক্সে নতুন যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিটি (অ্যান্টি-স্টলিং সিস্টেম) ছিল পাইলট তার সঙ্গে সংগ্রাম করছিলেন। বিমানের স্বয়ংক্রিয় ওই পদ্ধতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের সাবেক মহাপরিদর্শক ম্যারি স্কিয়াভো সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘এটা অত্যন্ত সন্দেহজনক। নতুন একটি মডেলের বিমান এক বছরে দুইবার বিধ্বস্ত হলো। বিমান পরিবহন শিল্পে এটি সতর্ক সংকেত বাজিয়ে দিয়েছে, কারণ এমনটি সাধারণত ঘটে না।’

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের দ্য বোয়িং কোম্পানী বিমান, রোটোরক্রাফট, রকেট, ও স্যাটেলাইট পরিকল্পনা, তৈরি এবং বিক্রয় করে। তাছাড়া এই কোম্পানী ভাড়া এবং পণ্য সমর্থন সেবা প্রদান করে। বোয়িং সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক বিমানের নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।