আইএসের শামীমাকে নেদারল্যান্ডসও ঠাঁই দেবে না

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫২ পিএম, ০৪ মার্চ ২০১৯

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণী শামীমাকে নিজ দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়ার যে কথা বিবিসিকে বলেছিলেন তার ডাচ নাগরিক স্বামী ইয়াগো রিদাইক সেই সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। লন্ডন থেকে পালিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেয়া শামীমা সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে ফিরতে চাইলে তাতেও বাধা দেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে শামীমা দেশে ঢুকতে দেবে না নেদারল্যান্ডস। দেশটি জানিয়েছে, কোনো ডাচ নাগরিকের স্ত্রী বা জীবনসঙ্গীর নেদারল্যান্ডসে বসবাসের অনুমতি পেতে হলে বা বেড়াতে আসতে চাইলে অবশ্যই তার বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।

তাছাড়া দেশটির আইন অনুযায়ী, শামীমা যখন বিয়ে করেন, তখন তার বিয়ের বয়স হয়নি। তাই তারা দাবি করছে, শামীমাকে তার স্বামীর সঙ্গে দেশে যেতে দেবে না। এদিকে যুক্তরাজ্যও শামীমার পাসপোর্ট বাতিলসহ তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

অবশ্য এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে দেশটির হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেননা ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী দেশটির কোনো নাগরিককে রাষ্ট্রহীন করা যাবে না। আর শামীমার বাবা-মা বাংলাদেশি বলে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে প্রসঙ্গের অবতারণা করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তার জবাব দেয়া হয়েছে স্পষ্টভাবে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘শামীমাকে ভুলভাবে বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করায় বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নন। তিনি জন্মগতভাবে যুক্তরাজ্যের নাগরিক। কখনো বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করেননি তিনি। ফলে, বাংলাদেশে তাকে ফিরতে দেয়ার প্রসঙ্গও উঠতে পারে না।’

অবস্থা যখন এমন ঠিক তখনই সন্তানের জন্ম দেন শামীমা। তিনি এখন সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন। তবে সিরিয়ায় আইএসের শেষ ঘাঁটি নিশ্চিহ্ন করতে মার্কিন জোট যে হামলা চালাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, শামীমা তার শিশুসন্তানকে নিয়ে শরণার্থী শিবির ছেড়ে পালিয়েছেন।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়া যান। সেই সময় তার বয়স ছিল ১৫ বছর। চার বছরের আইএস জীবন কাটানোর পর সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শামীমা সন্তানের জন্ম দিতে যুক্তরাজ্যে ফিরতে চাইলে দেশটি তার যুক্তরাজ্যে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী শামীমা বেগম মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার আরও দুই বান্ধবীসহ তুরস্ক সীমান্ত হয়ে সিরিয়ার আইএস ঘাঁটিতে যান। সেখানে যাওয়ার পর নেদারল্যান্ডসের থেকে আসা এক আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন।

তার ডাচ নাগরিক স্বামী ইয়াগো রিদাইক সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের একটি বন্দিশিবিরে আটক আছেন। সম্প্রতি বিবিসি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্ত্রী শামীমা ও সন্তানসহ তিনি তার নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা জানান। তার এমন কথার পর নেদারল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ এমন কথা জানালো।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।